শঙ্খের ভাঙনে হুমকিতে বাঁশখালীর তেচ্ছিপাড়া

শঙ্খের ভাঙনে ধসে পড়া একটি বাড়ি। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের তেচ্ছিপাড়ায়।  হিমেল বড়ুয়া
শঙ্খের ভাঙনে ধসে পড়া একটি বাড়ি। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর পুকুরিয়া ইউনিয়নের তেচ্ছিপাড়ায়। হিমেল বড়ুয়া

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তীব্র হয়েছে শঙ্খ নদের ভাঙন। বর্ষা শুরুর পর থেকে উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের তেচ্ছিপাড়া ভাঙনের মুখে পড়েছে। গত ১৫ দিনে এই গ্রামের ২৬টি ঘর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে পুকুরিয়ার তেচ্ছিপাড়ার একটি গ্রামীণ সড়কও চলে গেছে নদী গর্ভে। বেপরোয়াভাবে নদ থেকে বালু তোলার ফলে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে বলে জানান গ্রামের বাসিন্দারা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, শঙ্খের ভাঙন থেকে বাঁচতে কয়েকটি পরিবার সরিয়ে নিচ্ছে বাড়ির জিনিসপত্র। কয়েকটি পরিবার গ্রামীণ সড়কের ওপর স্তূপ করে রেখেছে ভাঙন এলাকা থেকে সরানো খুঁটি, টিন ও বেড়া। 

শঙ্খের ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি নুরুল ইসলাম, জ্যোৎস্না আক্তার, নুরুল হক, মাহবুবুল আলমসহ বেশ কয়েকজন তাঁদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, বর্ষার পাশাপাশি নির্বিচারে বালু তোলার কারণে তাঁদের বাড়িঘর বিলীন হয়েছে।

ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত নুরুল ইসলাম বলেন, ৪ লাখ টাকা খরচ করে গত বছর পাকা বাড়ি বানিয়েছিলেন। এ বছর বাড়িটি নদী গর্ভে চলে গেছে। এই নিয়ে চারবার নদীর ভাঙনে বাড়ি হারিয়েছেন তিনি।

নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জ্যোৎস্না আক্তার বলেন, শঙ্খের ভাঙনের শিকার হয়ে পাঁচবার স্থান পরিবর্তন করেছেন তিনি। কমপক্ষে ২০ শতক জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে। ভাঙতে ভাঙতে নদীর পাড় নতুন বাড়ির কাছে চলে এসেছে। বাড়ির সরানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি।

ক্ষতিগ্রস্তরা আরও বলেন, পুকুরিয়ার তেচ্ছিপাড়ায় ভাঙন অব্যাহত রয়েছে অনেক বছর ধরে। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে বাঁধ তৈরি হলেও তেচ্ছিপাড়ায় ভাঙন রোধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নদী থেকে প্রভাবশালীরা বালু উত্তোলন করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, পুকুরিয়ার তেচ্ছিপাড়া অংশটি বেড়িবাঁধের আওতায় না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া যায়নি। বেড়িবাঁধের আওতায় আনার জন্য একটি প্রস্তাবনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাশ হলে প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে তেচ্ছিপাড়ার ৫০০ থেকে ৮০০ মিটার নদীর পাড় এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হবে। 

বালু উত্তোলনের বিষয়ে ইউএনও মোমেনা আক্তার বলেন, শঙ্খ নদ থেকে বালু তোলার অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। একই কাজ কেউ আবার করলে তাঁকেও আইনের আওতায় আনা হবে।