মদিনার হজ কার্যালয় যেন 'বাংলাদেশ'

মাথার ওপর বাংলাদেশের পতাকা। নিয়ন সাইনবোর্ডে বাংলায় লেখা ‘বাংলাদেশ’। মদিনার আল মাসনিয়া এলাকায় বাংলাদেশ হজ কার্যালয় খুঁজে নিতে এর বেশি আর কী লাগে! সৌদি আরবের মদিনায় বাংলাদেশ সরকারের হজ কার্যক্রম এ কার্যালয় থেকে পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ থেকে এবার ১ লাখ ২৭ হাজারের বেশি হজযাত্রী এসেছেন।

গতকাল শনিবার সকালে হজ কার্যালয় গিয়ে দেখা গেল, বাইরে অ্যাম্বুলেন্সসহ কয়েকটি গাড়ি। ভবনের প্রবেশমুখে মক্কার মানচিত্র। সরকারি ব্যবস্থাপনায় যেসব হজযাত্রী হজ পালন করতে এসেছেন, তাঁদের জন্য ভাড়া করা বাড়ির অবস্থান সে মানচিত্রে চিহ্নিত করা আছে। ভবনের ভেতরে ঢুকে মনে হলো, বাংলাদেশে চলে এসেছি। সবাই বাংলায় কথা বলছেন। অভ্যর্থনায় টেলিভিশনে বাংলাদেশি চ্যানেলের অনুষ্ঠান চলছে। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কার্যালয়ে ঢুকে আরাম পাওয়া গেল। বাইরের তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এজেন্সির বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে অভ্যর্থনাকক্ষে রাখা বাক্সে জমা দিতে হয়। হাতের বাঁয়ে আইটি সেল। তথ্যসেবা দিতে হজ ওয়েবসাইট প্রতিদিন হালনাগাদ করা হয় এখানে। আইটি সেল পার হলেই নিয়ন্ত্রণকক্ষ। নিয়ন্ত্রণকক্ষে কেউ কোনো সমস্যা নিয়ে এলে ব্যবস্থা নেন। টেবিলের সামনে বসা একজন হজযাত্রী বললেন, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হলো, তাঁদের সার্বক্ষণিক চিকিৎসক ও মেডিকেল দল আছে। হজ কার্যালয়ের মেঝেতে কার্পেট, জায়নামাজ বিছিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করেন হজযাত্রীরা।

মদিনার হজ মেডিকেল সেন্টারের আইটি বিভাগে রাখা টাচস্ক্রিনে হজযাত্রীরা পাসপোর্ট নম্বর বা হজ আইডি লিখে অপেক্ষা করছেন। যন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসছে ব্যবস্থাপত্রের কপি। তাতে হজযাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, বয়স, জেলা, তারিখ এবং আগে সেবা গ্রহণ করলে তার উল্লেখ থাকছে।

আইটি কর্মী জানালেন, এ তথ্যসংবলিত কাগজ নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসাসেবার পাশাপাশি বিনা মূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। জানা গেছে, হাজিদের মধ্যে সর্দি-কাশি, গলাব্যথা, শরীরব্যথা, ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনের রোগীর সংখ্যা বেশি। চিকিৎসক সবাইকে ঠান্ডা পানি পান করা থেকে বিরত থাকা, শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।