রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর নিহত হওয়ার মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে

বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় প্রাণ হারায় দুই শিক্ষার্থী। প্রথম আলো ফাইল ছবি
বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসচাপায় প্রাণ হারায় দুই শিক্ষার্থী। প্রথম আলো ফাইল ছবি

এক বছর আগে বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন তদন্ত কর্মকর্তার জেরা চলছে। রাষ্ট্রপক্ষ আশা করছে, খুব শিগগির মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হবে। আলোচিত এই মামলার বিচার চলছে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে।

ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ হলে শুরু হবে যুক্তিতর্কের শুনানি। যুক্তিতর্ক শেষ হলে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে যাবে।
২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর হোটেল র‍্যাডিসনের বিপরীত পাশের জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনের রাস্তার ওপর জাবালে নূর পরিবহনের তিনটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে একটি বাস রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর উঠে পড়ে। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত ও ৯ জন আহত হয়। নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব (১৭) ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম (১৬)। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন।

আদালত সূত্র বলছে, মামলার ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য রয়েছে।

গত ৬ সেপ্টেম্বর জাবালে নূর বাসের মালিক শাহাদাত হোসেনসহ ছয়জনকে আসামি করে ঢাকার আদালতে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অভিযোগপত্র দেন ডিবির পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম। ছয় আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

ছয় আসামি হলেন জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই চালকের দুই সহকারী এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ।

সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, অভিযোগ গঠনের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে জাবালে নূরের মালিক শাহাদাত হোসেন। তাঁর পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ আসে। বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আসামিদের মধ্যে এখন পলাতক আছেন কাজী আসাদ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, চালক ও চালকের সহকারীরা বেশি যাত্রী ওঠানোর লোভে যাত্রীদের কথা না শুনে, তাঁদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে জিল্লুর রহমান উড়ালসড়কের ঢালের সামনে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়ায়। এ সময় চালক মাসুম বিল্লাহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর বাস উঠিয়ে দেন। ঘটনাস্থলে দুজন শিক্ষার্থী মারা যান। অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, সেদিন বাস দুটির চালক ও চালকের সহকারীরা দুই থেকে তিনবার ওভারটেক করেন।