আত্মহত্যা করতে বৃদ্ধার নদে ঝাঁপ, অতঃপর...

কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়া

গড়াই নদে ঝাঁপ দিয়েছিলেন হেমলা খাতুন। পরে ২৫ কিলোমিটার দূর থেকে জীবিত অবস্থায় রোববার তাঁকে উদ্ধার করেন এক মাঝি। হেমলার ছেলে বলছেন, আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর ৯০ বছর বয়সী মা নদে ঝাঁপ দিয়েছিলেন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জুগিয়া গ্রামের মৃত তাইজাল আলীর স্ত্রী হেমলা খাতুন। তিন ছেলের সংসারে থাকেন তিনি।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুত্রবধূদের সঙ্গে বিবাদের জেরে শনিবার রাত ১২টার দিকে জুগিয়া গ্রামের বাড়ির পাশে গড়াই নদের তীরে যান হেমলা। আত্মহত্যা করার জন্য নদে ঝাঁপ দেন তিনি। কিন্তু ছয় ঘণ্টার বেশি সময় গড়াই নদের স্রোতে ভাসতে ভাসতে ২৫ কিলোমিটার ভাটিতে চলে যান। রোববার ভোরবেলায় নদের পানিতে বৃদ্ধাকে ডুবতে ও ভাসতে দেখেন খোকসা উপজেলার হিজলাবট ঘাটের নৌকার মাঝি আয়ুব আলী। কৌতূহলবশত নৌকা নিয়ে এগিয়ে যান তিনি। পরে হেমলাকে জীবিত উদ্ধার করেন তিনি। উদ্ধারের পর তাঁকে নদের পারের খানপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের বাড়িতে নিয়ে যান। বিল্লালের বাড়ির বারান্দায় শুকনা কাপড় পরিয়ে তাঁকে শুইয়ে রাখা হয়। তাঁর হৃৎস্পন্দন সচল ছিল। মাঝেমধ্যে কথাও বলছিলেন। কখনো ডুকরে কেঁদে উঠছিলেন। ওই নারীকে দেখার জন্য স্থানীয় লোকজন ভিড় করে।

মৃদু স্বরে হেমলা খাতুন বলেন, পুত্রবধূদের অত্যাচারে তিনি আত্মহত্যা করতে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। পানিও তাঁকে নিল না। তবে তিনি ছেলেদের কাছে ফিরে যেতে চান।

এ দিকে খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান ওই হেমলার ছেলে খয়বর আলী। তিনি বলেন, রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁদের মা ঘরে ছিলেন। সামান্য সাংসারিক বিবাদ ছিল। সকালে মাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। সকাল ১০টার দিকে জানতে পারেন তাঁদের মাকে খোকসাতে পাওয়া গেছে। দুপুরেই মাকে নিয়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

বৃদ্ধাকে উদ্ধারের সময় সেখানে ছিলেন স্থানীয় নারী রাজিয়া খাতুন। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে ওই নারী তাঁর দুই হাত উঁচু করছিলেন। হাত দেখেই নদের তীরে দাঁড়ান তাঁরা। একপর্যায়ে আয়ুব মাঝি নৌকা নিয়ে সেখানে যান। উদ্ধারের পর দেখতে পান তাঁর পরনের কাপড় কোমরে বাঁধা।