একমাত্র সন্তানকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি

দুই মাস ধরে নিখোঁজ ছেলে হাসানুর রহমানের সন্ধান চেয়ে মা হাসিনা বেগমের সংবাদ সম্মেলন। ডিআরইউ, ২৯ জুলাই। ছবি: ফোকাস বাংলা
দুই মাস ধরে নিখোঁজ ছেলে হাসানুর রহমানের সন্ধান চেয়ে মা হাসিনা বেগমের সংবাদ সম্মেলন। ডিআরইউ, ২৯ জুলাই। ছবি: ফোকাস বাংলা

ঢাকা থেকে মায়ের সঙ্গে ঈদ করতে দোহারে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন হাসানুর রহমান (২৯)। ঈদের কয়েক দিন আগে তারাবির নামাজ পড়তে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি তিনি। আজ সোমবার সকালে এ নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর মা হাসিনা বেগম।

হাসিনা বেগম (৭২) বাংলাদেশ বেতারের সাবেক সহকারী পরিচালক (অপারেশন)। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ বেতারে চুক্তিভিত্তিক ডিউটি অফিসার পদে কর্মরত আছেন। হাসানুর তাঁর একমাত্র সন্তান।

লিখিত বক্তব্যে হাসিনা বেগম বলেন, দোহারের লক্ষ্মীপ্রসাদ গ্রামে হাসানুরের নানার বাড়ি। সেখানে গত ২৯ মে রাতে মামাতো ভাই সাব্বিরের (২৫) সঙ্গে নামাজ পড়তে যান হাসানুর। এরপর থেকে আর ফেরেননি। সাব্বির ফিরে জানান, চার রাকাত নামাজ পড়ার পর হাসানুর একাই মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। কোথায় যাচ্ছেন, তা তখন বলেননি।

নিখোঁজের পর এলাকায় মাইকে ঘোষণা, আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করেও হাসানুরের সন্ধান পাননি হাসিনা বেগম। এরপর ৪ জুন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন দোহার থানায়।

হাসিনা বেগম বলেন, ১৯৯৫ সালে স্বামী জাহাঙ্গীর আলম মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি পশ্চিম আগারগাঁওয়ের ভাড়া বাসায় থাকেন। তাঁর একমাত্র সঙ্গী ছিলেন ছেলে হাসানুর। ২০০৮ সালে বনানীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে এ লেভেল পাশের পর উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে হাসিনা বেগম বলেন, অনেক চেষ্টা করেও দেশের বাইরে যেতে না পারায় হাসানুরের মধ্যে একধরনের হতাশা কাজ করছিল। এরই মাঝে একটি সফটওয়্যার তৈরি করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি প্রতিযোগিতায় পাঠান। সেখানেও টেকেননি, যা তাঁর হতাশা আরও বাড়িয়ে দেয়। প্রয়োজন ছাড়া কারও সঙ্গে মিশতেন না।

কাউকে সন্দেহ করছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের কারও সঙ্গে শত্রুতা নেই। সহজ-সরল মানুষ। গ্রামে সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়েও আমার ভাইদের ছেলেদের সঙ্গে কখনো ঝগড়া হয়নি। একা ঢাকায়ও আসতে পারবে না। জানি না এই কাজটা কে কোন উদ্দেশে করল। যেই করুক, তাকে বলব, আমি একজন বৃদ্ধা মা। ছেলেটাই আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। তাকে তোমরা ফিরিয়ে দাও।’