স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ, স্বামী আটক

নরসিংদীর বেলাব উপজেলায় স্ত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতনের অভিযোগে প্রবাসফেরত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে উপজেলার বিন্নাবাইদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারীর নাম খুকি বেগম (২২)। অভিযুক্ত স্বামীর নাম আবদুর রশিদ (২৬)। খুকি বেগম কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার দশপাখি গ্রামের গোলাপ মিয়ার মেয়ে। গুরুতর আহত খুকি বর্তমানে বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় খুকির বাবা গোলাপ মিয়াকেও পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত আবদুর রশিদ বেলাব উপজেলার বিন্নাবাইদ গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। প্রায় আড়াই বছর আগে খুকির সঙ্গে তাঁর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।

খুকি বেগম ও তাঁর মা রাবেয়া বেগম পুলিশের কাছে অভিযোগে বলেন, বিয়ের ১০ থেকে ১৫ দিন পরেই রশিদ কাজ করতে মালয়েশিয়ায় চলে যান। সেখানে যাওয়ার পর স্ত্রী খুকির সঙ্গে যোগাযোগ ও তাঁর ভরণপোষণ বন্ধ করে দেন। তখন থেকেই স্বামীর বাড়ির লোকজন খুকিকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। টিকতে না পেরে বাধ্য হয়ে খুকি তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান।

অভিযোগে আরও বলা হয়, কিছুদিন আগে রশিদ প্রবাস থেকে ফিরে এলাকার কিছু লোকের সহায়তায় খুকিকে বাবার বাড়ি থেকে ফিরিয়ে আনতে যান। এ সময় খুকি তাঁর ওপর যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও প্রবাসে গিয়ে খোঁজখবর না রাখার অভিযোগে স্বামীর বাড়িতে ফিরতে চাননি। একপর্যায়ে সবার অনুরোধে তিনি স্বামীর বাড়ি ফিরে আসেন। স্বামীর বাড়িতে ফেরার পরই খুকির ওপর নতুন করে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সোমবার দুপুরে ঘরের দরজা বন্ধ করে আঙুল দিয়ে খুকির স্পর্শকাতর স্থানে নির্যাতন করেন রশিদ।

বেলাব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক পান্না বেগম বলেন, স্পর্শকাতর স্থানে পাশবিক এই নির্যাতনের কারণে ওই নারীর জরায়ু মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক সেলাই দিতে হয়েছে। তাঁর সুস্থ হতে অনেক দিন সময় লাগবে।

বিন্নাবাইদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘গৃহবধূকে আমরাই তাঁর বাবার বাড়ি থেকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। স্বামী আবদুর রশিদের এমন নির্যাতন সত্যিই দুঃখজনক।’

বেলাব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনা জানতে পারি। তারপর আবদুর রশিদকে আটক করেছি। এই ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’