ধর্ষণের আসামিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সাবেক স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। থানার হাজত থেকে ওই আসামিকে গত রোববার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা (মঠবাড়িয়া সার্কেল) তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে যান। পরে ওই আসামিকে তিনি ছেড়ে দেন।

এ সম্পর্কে সুপার হাসান মোস্তফা মুঠোফোনে বলেন, ‘মামলার বাদী তথ্য গোপন করে মামলা করেছেন। তাঁকে তালাকের চিঠি ডাকযোগে পাঠানোর রসিদ ও ওই নারীর ঝালকাঠি আদালতে করা দুটি মামলা পর্যালোচনা করে আসামিকে নির্দোষ মনে হয়েছে। এ জন্য তাঁকে এক ব্যক্তির জিম্মায় দিয়েছি।’

থানা-পুলিশ ও ওই নারীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হোগলপাতি গ্রামের হাতেম আলী খানের ছেলে আবুল কাশেমের সঙ্গে পাশের ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার সোনাউটা গ্রামের এক নারীর (২৫) ছয় বছর আগে বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিন বছরের একটি ছেলেসন্তান আছে। গত ১ মার্চ আবুল কাশেম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন। তালাকের এক দিন পর থেকে আবুল কাশেম পুনরায় অবৈধভাবে সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যান। গত ১৮ মে আবুল কাশেম স্ত্রীকে মারধর করলে তিনি বাবার বাড়ি কাঁঠালিয়া চলে যান। গত ২০ জুন বাবার বাড়ি থাকা অবস্থায় ওই নারী ডাকযোগে তালাকনামা পান। গত রোববার দুপুরে ওই নারী আবুল কাশেমের নামে মঠবাড়িয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। ওই দিন বিকেলে আবুল কাশেমকে উপজেলার টিকিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের সামনের সড়ক থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফার নির্দেশে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (এসআই) সুভাষ ব্যানার্জি বলেন, আসামি আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করে থানাহাজতে রাখা হয়েছিল। পরে রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসান মোস্তফা আসামিকে নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে যেতে বলেন। সেখানে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে হাতকড়া খুলে স্থানীয় এক ব্যক্তির জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মঠবাড়িয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আবদুল্লাহ বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাঁর কার্যালয়ে আসামিকে ডেকে নিয়ে এক ব্যক্তির জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছেন। নারী নির্যাতন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেপ্তারের পর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে ছেড়ে দেওয়া এখতিয়ার–বহির্ভূত।

এ সম্পর্কে পিরোজপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, একজন এজাহারভুক্ত আসামিকে থানার ওসি বিশেষ কারণে জামিন দিতে পারেন। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের জামিন দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়েছে।