কুষ্টিয়ায় ১৮ ঘণ্টায় ১৮ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী। ছবি: প্রথম আলো
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী। ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে গত ১৮ ঘণ্টায় ১৮ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। অর্থাৎ ঘণ্টায় একজন করে রোগী ভর্তি হচ্ছে। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবমতে, গত ২৪ দিনে ৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৯ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে গেছে। বাকি ২৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ছয়জন শিশু। দুজন শিশুর বয়স মাত্র সাত মাস করে।

শহরের কয়েকটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেসরকারি তথ্য বলছে, এ জেলার ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি। অন্তত ৭০ জন ডেঙ্গু রোগী এখানে শনাক্ত করা হয়েছে। শহরের তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার মিলে প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন করে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে।

জানতে চাইলে আজ সকালে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক নূরুন নাহার বেগম প্রথম আলোকে বলেন, রোগী ভর্তির হার বেড়েই যাচ্ছে। এ জন্য গতকাল সোমবার বিকেলের পর হাসপাতালের পেয়িং ওয়ার্ডকে ডেঙ্গু ওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে ৩৪টি বেড আছে। মশারিসহ সবকিছু বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাঁরা ওয়ার্ডটি তদারকি করছেন।

আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডেঙ্গু ওয়ার্ডে রোগীদের মশারির ভেতর রাখা হয়েছে। সেখানে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ ও জুনিয়র নার্স তাদের সেবা দিচ্ছেন।

কুষ্টিয়া শহরের উপজেলা সড়কের বাসিন্দা বিউটি খাতুন তাঁর আড়াই বছর বয়সী মেয়ে তাহিয়া রুবাইয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। বিউটি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে জ্বর হলে শনিবার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জানতে পারেন মেয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। তাহিয়া জন্মের পর থেকে কুষ্টিয়াতেই আছে। ঢাকা যায়নি।

পাশের বিছানা শুয়ে আছে আবির হাসান নামের সাত মাস বয়সী এক শিশু। শহরের র‍্যাব গলিতে থাকেন তার বাবা–মা। আবিরের মা পাপিয়া খাতুন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে ভর্তি করেছেন। আবিরও জন্মের পর জেলার বাইরে যায়নি।

মুহতাসীন তাইফ নামের সাত মাস বয়সী আরেকটি শিশুও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একই দিন ভর্তি হয়েছে। তার মামা ফাহিমা রহমান বলেন, তাইফ জন্মের পর থেকেই কুষ্টিয়াতে থাকে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ এ এস এম মুসা কবির প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একজনের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে গতকাল বিকেলে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। দু–এক দিনের মধ্যে হাসপাতাল থেকেই সব ধরনের ডেঙ্গু শনাক্তের পরীক্ষা বিনা মূল্যে দেওয়া হবে।