রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বিরাট বোঝা: প্রধানমন্ত্রী

লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন। ছবি: বাসস
লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন। ছবি: বাসস

মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়াটা বাংলাদেশের জন্য ‘এক বিরাট বোঝা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ঢাকা দীর্ঘায়িত এই রোহিঙ্গা সমস্যাকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি করতে চায়।

লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় লর্ড আহমেদ অব উইম্বলডন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া আমাদের জন্য এক বিরাট বোঝা। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এটির সমাধান করতে চাই।’ প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এ কথা জানান।

লর্ড আহমেদ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের কমনওয়েলথ এবং জাতিসংঘবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

বর্তমানে যুক্তরাজ্য সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতদের সম্মেলন এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানে যোগদান উপলক্ষে গত ১৯ জুলাই সরকারি সফরে লন্ডন পৌঁছান।

লন্ডন থেকে টেলিফোনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বাসসকে বলেন, লর্ড আহমেদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে তাঁর দেশের সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন এবং বিষয়টি নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অবগত আছেন বলেও জানান।

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং লর্ড আহমেদ উভয়ই একমত পোষণ করে বলেন, ‘ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং সন্ত্রাসবাদকে ইসলাম কখনো সমর্থন করে না।’
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে একত্র করে এর বিরুদ্ধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করেছে।’

বাংলাদেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সকল ধর্মমতের মানুষ এ দেশে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে।’
ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধ জনগণের কাছে তুলে ধরতে তাঁর সরকার সারা দেশে ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার গড়ে তুলছে বলেও শেখ হাসিনা লর্ড আহমেদকে জানেন।

প্রধানমন্ত্রী ও লর্ড আহমেদ যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়াসংক্রান্ত ব্রেক্সিট ইস্যু নিয়েও আলোচনা করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন লর্ড আহমেদ ।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একমাত্র শিক্ষাই নারীর ক্ষমতায়নের নিশ্চয়তা বিধান করতে পারে।’

নারীর ক্ষমতায়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষকের ৬০ শতাংশ নারী নিয়োগ করছে।’
বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উভয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বৈঠকে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, ‘আগামীর দিনগুলোতে এই বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।’
লর্ড আহমেদের সঙ্গে তাঁর সহধর্মিণী সিদ্দিকা আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো.নজিবুর রহমান এবং যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।