একটু অসতর্কতায় প্রাণ গেল শিশুর

ফুটফুটে শিশুটির বয়স আড়াই বছর। সারা দিন ভাঙা ভাঙা ঢংয়ে মিষ্টি কথা বলত। ছোটাছুটি করে মাতিয়ে রাখত পুরো বাড়ি। একমাত্র বুকের ধনকে নিয়ে মা-বাবার স্বপ্নের শেষ ছিল না। কিন্তু সবকিছুর সমাপ্তি ঘটিয়েছে একটু অসতর্কতা। গোসলখানায় রাখা পানিভর্তি বালতিতে ডুবে শিশুটির মৃত্যু হয়।

আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের শেখেরহাট পাঠানপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

শিশুটির নাম আকাশ রহমান। সে ওই গ্রামের কৃষক মমেদুল ইসলাম ও আরজিনা বেগমের সন্তান।

প্রতিবেশীদের সূত্রে জানা গেছে, আরজিনা বেগম কাপড় পরিষ্কারের জন্য গোসলখানায় বড় একটা বালতিতে পানি ভর্তি করে রাখেন। এরপর তিনি বাইরে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। শিশুটি তখন একাই বাড়ির আঙিনায় খেলছিল। কিছু সময় পর আরজিনা খেয়াল করেন আকাশ আঙিনায় নেই। তখন শুরু হয় খোঁজাখুঁজি।

প্রতিবেশীরাও আকাশকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু কোথাও মিলল না শিশুটির খোঁজ। পরে মা আরজিনা বেগমই গোসলখানায় ঢুকে দেখতে পান আকাশ বালতির পানিতে ডুবে আছে। তাঁর চিৎকারে উপস্থিত লোকজন বুঝতে পেরেছে ছোট্ট দেহে প্রাণ নেই। তবুও দ্রুতগতিতে নেওয়া হলো বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক জিয়াউল হক বলেন, হাসপাতালে আনার অনেক আগেই শিশুটি মারা গেছে।

মঙ্গলবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, আকাশের মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি চলছে। তার ছোট্ট দেহটি সাদা কাফনে মুড়িয়ে রাখা ছিল বাড়ির বারান্দায়। মা আরজিনা বেগম থেমে থেমে ডুকরে কাঁদছিলেন। বলছিলেন, ‘আল্লাহ আমাকে না নিয়ে তুই আমার সোনাটাকে নিয়ে গেলি কেন? অপরাধ করেছি আমি, ও তো করেনি। কোথায় আমার সোনা, ওকে আমার বুকে এনে দাও। ওকে ছাড়া আমি বাঁচব না।’