স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী করে?

ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা নির্মূলে যথাযথ ওষুধ কবে আনা যাবে, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষকে আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। মশা নির্মূলে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম ও পদক্ষেপবিষয়ক শুনানিতে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চকে এই তথ্য জানাতে হবে।

দুই সিটির আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘আমরা চাই যথাযথ ওষুধ ছিটানো হোক। কবে আনতে পারবেন। আপনারা জানাবেন। যা দাখিল করার তা হলফনামা আকারে দিয়ে বলবেন।’ শুনানির সময় আদালত বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের (ডিএস) উপসচিবের স্ত্রী ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কী করে? নিজের মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার স্ত্রী মারা যায়, তারা জেগে ঘুমালে আমরা তো তাদের তুলতে পারব না।’

আদালত সিটি করপোরেশনের আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘ওষুধ কার্যকর হলে অধিকতর কার্যকর ওষুধ লাগবে কেন? যেটি আছে, সেটি কাজ করছে না? আপনার রাইফেল আছে, গুলি নেই। রাইফেলে গুলি না থাকলে কি কাজ হবে?’ তখন উত্তরের আইনজীবী বলেন, ওষুধে কাজ হচ্ছে।

পরে আদালত বলেন, ‘সরকার বলছে কার্যকর ওষুধ ছিটানোর কথা। যদি ওষুধ কার্যকরই হবে, তাহলে সরকার কেন বলছে?’ তখন আইনজীবী বলেন, ওষুধের মাত্রা বাড়িয়ে কার্যক্রম চলছে।

তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি একপর্যায়ে বলেন, ‘আপনারা বিষয়টি মোটেই সিরিয়াসলি নিচ্ছেন না। জবাবদিহি তো করতে হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে আপনাদের সতর্ক করা হয়েছিল। আপনারা কোনো পদক্ষেপ নিলেন না কেন?’ এ সময় আইনজীবী বলেন, তখন থেকে কার্যক্রম চলছে। এখন প্রকোপ বেড়েছে।

আদালত বলেন, ‘কাজ করলে প্রকোপ কেন বাড়বে? রুল দেওয়ার পর আপনাদের (সিটি করপোরেশনের) ঘুম ভাঙল। তখন কয়েক দিন উল্টাপাল্টা কথা বললেন। এখন সরকার ধমক দিয়েছে, আপনারা চুপচাপ।’

‘ডেঙ্গুতে মৃত্যু’ ও ‘রোগী ভর্তি’ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন নজরে এলে ১৪ জুলাই হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। আদালতে দক্ষিণ সিটির পক্ষে আইনজীবী সাঈদ আহমেদ ও উত্তরের পক্ষে আইনজীবী তৌফিক ইনাম শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল জায়েদী হাসান খান।