বারান্দায় ঝুলে থাকা মেয়েটিকে পরিবারের কাছে পাঠাবে পুলিশ
রাজধানীর কাকরাইলের একটি বহুতল ভবনের ১০ তলার বারান্দার বাইরে ঝুলে থাকা কিশোরী খাদিজাকে উদ্ধারের পর ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। পুলিশ গতকাল মঙ্গলবারই তাঁকে সেখানে পাঠায়। মেয়েটিকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর পরিবারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ১৩–১৪ বছর বয়সী মেয়েটিকে দুই দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে নির্যাতনের শিকার হয়েছে কি না, তা বারবার জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে সে কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা পুলিশকে জানায়নি। সে কেন বারান্দার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল, তা জানতে চাইলে আরেক গৃহকর্মী হেলেনার সঙ্গে তার ঝগড়ার বিষয়টি উল্লেখ করে। নারী পুলিশ সদস্য দিয়েও নানাভাবে ওই বাড়িতে কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়। তবে মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হয়নি বলে জানিয়েছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে খাদিজা পুলিশকে বলেছে যে সে দেড় বছর ধরে এখানে আছে। সুনামগঞ্জ থেকে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে এই বাসায় কাজে এসেছিল। তার বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। বাবা-মা উভয়েই আবার বিয়ে করেছে। এমন অবস্থায় সে এখানে কাজ করতে এসেছিল। জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি বলেছে, ওই বাসার ছেলেমেয়েরাও তার সঙ্গে খারাপ কিছু করেনি। সেখানে সে ভালোই ছিল। গতকাল আরেক গৃহকর্মী হেলেনা কাপড় কাচার কাজ করার সময় সে দাঁড়িয়ে সেটি দেখছিল। তখন হেলেনা তাকে বকাঝকা করতে থাকে। এরপর সে এসি মেরামতের জন্য থাকা বারান্দার পকেট গেট দিয়ে বের হয়ে বাইরে গিয়ে দাঁড়ায়। আশপাশের লোকজনের চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে গৃহকর্ত্রী সেখানে যান। পরে সে নিজেই বাসায় উঠে আসে।
পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের সহকারী কমিশনার সুরঞ্জনা সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটি গতকাল রাতে আমাদের এখানে এসেছে। সে মানসিকভাবে আতঙ্কের মধ্যে আছে। এ অবস্থায় সাধারণত কিছু বলতে চায় না। ভয়ের মধ্যে থাকে। সে সুস্থ হলে তাকে আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করব। অপর গৃহকর্মীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে সে এখানে নেমেছিল বলে জানিয়েছে। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে তাদের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হবে।’
পুলিশ জানায়, মেয়েটির বয়স কম। পুলিশ তাকে সেখানে রাখাটা নিরাপদ মনে করছে না। আবার এমন ঘটনা আবারও ঘটানোর আশঙ্কা আছে। আরও জিজ্ঞাসাবাদে যদি মেয়েটির প্রতি কোনো ধরনের নির্যাতনের তথ্য পাওয়া যায়, তবে ওই পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।