এক গরুর ওজন ৪২ মণ!

৪২ মণ ওজনের এ গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা। গত সোমবার পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছোট গুয়াখড়া গ্রামে।  ছবি: প্রথম আলো
৪২ মণ ওজনের এ গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ৩০ লাখ টাকা। গত সোমবার পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছোট গুয়াখড়া গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

কালো শরীরে সাদা ছাপের একটি ষাঁড়। ৯ ফুট দৈর্ঘ্য ও সাড়ে ৫ ফুট উচ্চতার এ গরুটির ওজন ৪২ মণ! এটি বেড়ে উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছোট গুয়াখড়া গ্রামে। এটির মালিক স্থানীয় মিনারুল ইসলাম। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য তিনি ষাঁড়টির দাম হেঁকেছেন ৩০ লাখ টাকা! গরুটি দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমছে মিনারুলের বাড়িতে। 

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিনারুল ইসলাম (৪৪) বছর দেড়েক আগে প্রতিবেশী এক বন্ধুর কাছ থেকে গরুটি কেনেন। তখন ওজন ছিল ১৫ থেকে ১৬ মণ। এরপর দেশীয় পদ্ধতিতে গরুটি মোটাতাজা করার প্রক্রিয়া শুরু করেন। প্রয়োজনমতো খাবার ও পরিচর্যায় গরুর আকৃতি বাড়তে থাকে। আদর করে নাম দেন ‘টাইগার’। দিনে দিনে ওজন বেড়ে গরুটি ৪২ মণে এসে দাঁড়ায়। তিনি এ বছর গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। 

মিনারুল ইসলাম জানান, গরুটি ফিজিয়ান জাতের। এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে কাঁচা ঘাস, খড়, গম ও ধানের ভুসি, ভুট্টা, ডালের গুঁড়া, তৈল বীজের খৈল, ছোলা ও খুদে ভাত। সব মিলিয়ে গরুটি প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক মণ খাবার খায়। শুরুর দিকে খাবার কম খেলেও দিনে দিনে তার খাবার পরিমাণ বাড়ে। বর্তমানে গরুটির ওজন প্রায় ৪২ মণ। 

মিনারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের গরু লালন–পালন খুবই কষ্টের। পরিবারের একজন সদস্যের মতো করে আমরা গরুটি পালন করেছি। পরিবারের সবাই মিলে যত্ন নিয়ে বড় করেছি। অনেক শ্রম ও অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ৩০ লাখ টাকায় গরুটি বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি।’ 

গত সোমবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে দুটি মোটা দড়িতে বেঁধে রাখা হয়েছে গরুটি। আর তাকে দেখতে বাড়ি ভর্তি মানুষ। শত মন্তব্য দর্শনার্থীদের। আর মালিকের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসায় যেন মন খারাপ টাইগারের। মিনারুলের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা সন্তানের মতন করে টাইগারকে পালছি। কুনুদিন কোনো কষ্ট পাবের দেইনেই। এহন মেলা মানুষ গুরুডা দেখতি আমাগের বাড়িত আসতেছে। ইডা ভালোই লাগতেছে। তয় টাইগার চলে যাবি ভাবলিই মনডা খারাপ লাগে।’

গরু দেখতে এসে স্থানীয় প্রবীণ গাজিউর রহমান জানান, তিনি এত বড় গরু আগে কখনো দেখেননি।