মানিকগঞ্জে সরকারি হাসপাতালে টাকা নিয়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা

মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ

সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা বিনা মূল্যে করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও মানিকগঞ্জে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েকজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা এই অভিযোগ করেন।

সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম প্রধান স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের নির্দেশে ডেঙ্গু রোগসংক্রান্ত সব পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে এবং বেসরকারি হাসপাতালে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকায় করতে বলা হয়েছে। অথচ এই নির্দেশনা অমান্য করে কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়।

ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী শাকিলা আইরিনের অসুস্থতা দেখা দিলে তিনি সিঙ্গাইরের দক্ষিণ জামশার বাড়িতে যান। সোমবার কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষার পর তাঁর ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। ওই দিনই তাঁকে ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

গতকাল দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাকিলা আইরিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা বিনা মূল্যে করার নির্দেশনা থাকলেও তাঁর কাছ থেকে ২৫০ টাকা নেওয়া হয়েছে। শাকিলার পাশের শয্যায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ঢাকার আশা ইউনিভার্সিটির এমবিএর শিক্ষার্থী ঈশিতা আক্তারও একই অভিযোগ করেন।

অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজির মাসুদুর রহমান বলেন, এ পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ২৭ জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। যাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ মো. আকতারুজ্জামান বলেন, সরকারি হাসপাতালে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু রোগসংক্রান্ত সব পরীক্ষা বিনা মূল্যে করার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কাগজাদি বিলম্বে আসায় আগের নিয়মেই টাকা নেওয়া হয়েছিল। তবে এই টাকা তাঁদের ফেরত দেওয়া হবে। 

মানিকগঞ্জে গতকাল বিকেল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৮ জন রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে গতকাল নতুন করে ছয়জন রোগীকে শনাক্ত করা হয়। তাঁদের ২৫০ শয্যার জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের মধ্যে চারজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসার জন্য দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩২ জন রোগী জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।