গ্যাং কালচার কঠোর হাতে দমন করবে পুলিশ

মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ফাইল ছবি
মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ফাইল ছবি

দেশের বিভিন্ন জায়গায় উঠতি বয়সী ছেলেদের মধ্যে যে ‘গ্যাং কালচার’ গড়ে উঠেছে, সেটি কঠোরভাবে দমন করবে পুলিশ। বুধবার পুলিশ সদর দপ্তরে আয়োজিত ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহিনীর প্রতিটি ইউনিটকে এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন।

সভায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা গোয়েন্দা তথ্য উদ্ধৃত করে বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় কিশোররা গ্যাং কালচার গড়ে তুলছে ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক এই নির্দেশ দেন। বুধবারের ওই সভায় গুরুত্ব পায় ঈদ, গুজব প্রতিরোধ ও ৯৯৯।

আইজিপি মো. জাবেদ পাটোয়ারী সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া মহাসড়কে কোরবানির পশুবাহী ট্রাক না থামানোর জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মহাসড়কের ওপর যেন কোনোভাবেই কোরবানির পশুর হাট বসানো না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। ঈদ উপলক্ষে মহাসড়ক, নৌপথ ও রেলপথে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশকে উদ্যোগী হতে বলেছেন আইজিপি। পুলিশকে কোরবানির পশুর চামড়া পাচার রোধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। সভায় আইজিপি বলেন, কেন্দ্রীয় ঈদগাহসহ দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাতস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকে ও সাদাপোশাকে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

গুজব প্রতিরোধে পুলিশ কঠোর অবস্থানে আছে বলে সভায় জানানো হয়। কোনো জায়গায় গুজব ছড়ানো হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক। বিশেষ করে ঈদ সামনে রেখে পোশাকশিল্প নিয়ে যেন কোনো ধরনের গুজব সৃষ্টি না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি গুজবের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান এবং অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। পাসপোর্টের তথ্য যাচাইয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আইজিপি বলেছেন, বাংলাদেশের নাগরিক নন, এমন কেউ যেন পাসপোর্ট না পায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।

জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-কে মুজিব বর্ষের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, এ সেবা বর্তমানে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ৯৯৯-এর কলকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

বুধবারের সভায় পুলিশ মহাপরিদর্শক বলেছেন, পুলিশ সদস্যদের কল্যাণের কথা যেমন বিবেচনায় রাখতে হবে, তেমনি অপরাধে জড়ালে যেন কোনো ধরনের অনুকম্পা দেখানো না হয়।

সভায় পুলিশ সদর দপ্তরের হেডকোয়ার্টার্সের উপমহাপরিদর্শক (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান গত তিন মাসের (এপ্রিল-জুন) সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, রাজশাহীর প্রিন্সিপাল মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত আইজিপি (এঅ্যান্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অ্যান্টিটেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মোহাম্মদ আবুল কাশেম, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মহসিন হোসেন, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আবদুস সালাম, সিআইডি-প্রধান মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, এসবি-প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, টিঅ্যান্ডআইএমের অতিরিক্ত আইজিপি মো. ইকবাল বাহার, এপিবিএনের অতিরিক্ত আইজিপি মোশারফ হোসেন, পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান, অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।