অবশেষে ভাঙা পড়ছে দুটি অবৈধ ভবন

চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরের হিজড়া খালের ওপর নির্মিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ভবন ভেঙে ফেলা হবে। ভবন দুটির কারণে নগরের প্রবর্তক মোড়ে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ভবনগুলো থেকে কার্যক্রম সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর আমলে ২০০০ সালে হিজড়া খালের প্রবর্তক মোড়ে চারতলা এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পশ্চিম ফটকের পাশে ছয়তলা ভবন নির্মাণ করা হয়। চারতলা ভবনটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং অন্যটিতে প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার হিজড়া খালের ওপর অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। ইতিমধ্যে খালের জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা ২০টি স্থাপনার মধ্যে রয়েছে পাকা ভবন ১০টি, আধা পাকা ৯টি ও ১টি সীমানাপ্রাচীর।

সিটি করপোরেশন বিভিন্ন সময়ে নগরের বিভিন্ন খাল ও নালা-নর্দমার ওপর সাতটি ভবন নির্মাণ করেছিল। এর মধ্যে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ভবন ছিল। ‘অভিযানে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ হবে তো?’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন গত ৩০ মে প্রথম আলোতে প্রকাশিত হয়।

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ভবনসহ হিজড়া খাল থেকে সব ধরনের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক আহমদ মঈনুদ্দিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খালের ওপর অবৈধ সব স্থাপনা অপসারণ করা হবে। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনটি খালের ৩ থেকে ৭ ফুট জায়গা দখল করে এবং প্রকৌশল অনুষদের ভবনের পুরো অংশ খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে। এগুলো উচ্ছেদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে অপসারণ করবে। কবে নাগাদ অপসারণ করা হবে তা আগামী রোববার চূড়ান্ত হবে।

২০১৪ সালের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভায় প্রশাসনিক ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম। তবে গত পাঁচ বছরেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় থাকা দোকানগুলো থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন কর্মীরা। একটি দোকানের অংশবিশেষ দোকানমালিক নিজ উদ্যোগে ভাঙা শুরু করেছেন। দোকানিরা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেয়ে খালের ওপর নির্মিত অংশ থেকে জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, হিজড়া খালের ওপর নির্মিত দুটি ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রম পরিচালনা না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম নগরের হাজারী গলিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি ভবনে স্থানান্তর করা হবে। আর প্রশাসনিক ভবনের কার্যক্রম হাজারী গলি বা জিইসি মোড়ের ক্যাম্পাসের যেকোনো একটিতে নিয়ে যাওয়া হবে। তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

ভবন অপসারণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ভবনগুলোর কার্যক্রম হাজারী গলি ও জিইসি মোড়ের ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হবে। এ জন্য একটু সময় লাগবে। আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে ভবনগুলো অপসারণ করবে। কেননা জলাবদ্ধতা নিরসন হোক তা তাঁরাও চান।