শ্রীমঙ্গলে স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা হলো কাঁচা সড়ক

স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কারের কাজ করছেন খাসিয়াপুঞ্জিতে বসবাসকারী মানুষেরা। গতকাল সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লাংলিয়া খাসিয়াপুঞ্জির প্রবেশপথে।  ছবি: প্রথম আলো
স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কারের কাজ করছেন খাসিয়াপুঞ্জিতে বসবাসকারী মানুষেরা। গতকাল সকালে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের লাংলিয়া খাসিয়াপুঞ্জির প্রবেশপথে। ছবি: প্রথম আলো

কারও হাতে বাঁশের ঝুড়ি, কারও হাতে কোদাল। একজন মাটি ও বালু কেটে ভরে দিচ্ছেন ঝুড়ি, অন্যরা সেই মাটির ঝুড়ি নিয়ে রাস্তার ভাঙা অংশে ফেলছেন। কেউ কেউ বাঁশ কেটে বাঁশ ও বালু–মাটির বস্তা দিয়ে গার্ড ওয়াল তৈরি করছেন—এভাবেই স্বেচ্ছাশ্রমে ঠিক হয়ে গেল পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাওয়া রাস্তাটি।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার লাংলিয়া খাসিয়া পুঞ্জিতে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাজ করে এভাবে স্বেচ্ছাশ্রমে পুঞ্জির একটি গুরুত্বপূর্ণ কাঁচা রাস্তা মেরামত করা হয়।

স্বেচ্ছাশ্রমে কাজে আসা পুঞ্জির বাসিন্দা জারমিন লামিন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার একটি বড় অংশ ছড়ার সঙ্গে মিশে যাচ্ছে। রাস্তার ভাঙা অংশের সঙ্গে নতুন সেতু। এ অংশ সংস্কার না করা হলে সেতুর ক্ষতির আশঙ্কা ছিল। এ রাস্তা দিয়ে পুঞ্জির অনেক মানুষ যাতায়াত করে। পুঞ্জির উৎপাদিত পণ্য লেবু, পান ইত্যাদি বহনকারী যানবাহন ভাঙা রাস্তার জন্য চলাচল করতে পারছিল না। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কাজ করে না দেওয়ায় পুঞ্জিবাসী মিলে রাস্তাটি সংস্কার করেছে।

কাজে নিযুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করা কাঁচা রাস্তাটি লাংলিয়া পুঞ্জির একমাত্র রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক মানুষ যাতায়াত করে। প্রতিদিন পুঞ্জির সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ছয়-সাতটি জিপগাড়ি যাতায়াত করে। কিছুদিন আগে পাহাড়ি ঢলে রাস্তাটি ভেঙে গিয়েছিল। এরপর স্থানীয় লোকজন জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে ধরনা ধরলেও কাজ হয়নি। তখন পুঞ্জিবাসী মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা আর জনপ্রতিনিধিদের দিকে চেয়ে থাকেন না। নিজেরাই রাস্তাটি সংস্কার করে নেন।

সুনীল পানছেট নামের একজন বলেন, ‘পুঞ্জি থেকে শহরে যাওয়ার সময় পুঞ্জি থেকে টিপড়াছড়া পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা প্রায়ই নিজ উদ্যোগে এ রকম স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে রাস্তা সংস্কার করে আসছি। তবে এগুলো টেকসই নয়। সরকারের তরফ থেকে আমাদের রাস্তাটি পাকা করে দিলে আমরা খুবই উপকৃত হব।’

স্থানীয় সিন্দুরখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল হেলাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে রাস্তা সংস্কারের কাজ করেছেন, এটি ভালো উদ্যোগ। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এ রাস্তাটি পাকা করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। উপজেলা থেকে বরাদ্দ পেলে আমরা কাজ শুরু করব।’