জাহালম কেলেঙ্কারির 'মূল হোতা' ৭ দিনের রিমান্ডে

ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় বিনা অপরাধে নিরীহ জাহালম জেল খেটেছিলেন। আলোচিত এই জালিয়াতির মামলার অন্যতম আসামি আমিনুল হক। তাঁকে আজ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। সেগুনবাগিচা, ঢাকা, ১ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা
ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় বিনা অপরাধে নিরীহ জাহালম জেল খেটেছিলেন। আলোচিত এই জালিয়াতির মামলার অন্যতম আসামি আমিনুল হক। তাঁকে আজ দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। সেগুনবাগিচা, ঢাকা, ১ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা

আলোচিত জাহালম কেলেঙ্কারির অন্যতম প্রধান আসামি আমিনুল হক সরকারকে রিমান্ডে এনে আবারও জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনা পুনঃতদন্তের অংশ হিসেবে সহকারী পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা ৪৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে তাঁকে সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে আনা হয়। এবার তাঁকে ৭ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এর আগে জুন মাসেও রিমান্ডে এনে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল।

দুদক জানিয়েছে, মানিকগঞ্জের মো. আমিনুল হক সরকার ওরফে মো. আমিনুল হক ওরফে হকসাব দুদকের ৩৩টি মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি এবং সোনালী ব্যাংকের ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত সংঘবদ্ধ জালিয়াত ও প্রতারক দলের অন্যতম হোতা। তিনি প্রতারণা ও জালিয়াতিতে মূখ্যভূমিকা পালন করেছেন।

সূত্র জানায়, সোনালী ব্যাংকের জালিয়াতির ঘটনায় ২০১০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর জালিয়াতির সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ২০ হাজার টাকার মধ্যে ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা তার অংশ হিসেবে পেয়েছেন।

দুদক সূত্র জানায়, ব্র্যাক ব্যাংকের বেগম রোকেয়া সরণি শাখায় তার নামে পরিচালিত হিসাবে ৫২ লাখ ১৪ হাজার ৮৯৭ টাকা ও মিরপুর শাখায় ৩০ লাখ ৬৪ হাজার ১৮৯ টাকা আদালতের নির্দেশে অবরুদ্ধ (ফ্রিজ) করা হয়েছে। এ ছাড়া মানিকগঞ্জ রেজিস্ট্রি অফিসের ১০টি দলিল মূলে মানিকগঞ্জ সদরে এক কোটি ১৭ লাখ ৮৪ হাজার টাকায় কেনা ৪৭৩ শতাংশ জমি আদালতের নির্দেশে ক্রোক করা হয়। সূত্রমতে, সোনালী ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করে তিনি একুশ শতকের উন্নয়ন নামে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) চালু করেন। সেখানে তাঁর বিনিয়োগ এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। ব্র্যাক ব্যাংকের মিরপুর শাখায় তার ১১ টি হিসাবে ২০১০-১১ সালে প্রায় ৮ কোটির বেশি লেনদেন হয়।

সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে করা ৩৩ মামলায় আবু সালেককে অন্যতম আসামি করা হয়। কিন্তু তদন্তের সময় ঠাকুরগাঁওয়ের সালেকের বদলে টাঙ্গাইলের জাহালমকে আসামি করা হয়। আসামি হিসেবে তাকে আবু সালেক ওরফে জাহালম হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ফলে সালেকের স্থলে তিন বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছে টাঙ্গাইলের জাহালমকে।

বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোয় খবর প্রকাশ হওয়ার পর ৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও মামলার বাদীসহ চারজনকে তলব করেন হাইকোর্ট। ‘‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না…
শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়।