রাজনৈতিক শক্তিকে আমলে নিতে সরকার বাধ্য

‘মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল ও মানবিক পাঠ্যসূচি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কার্যালয়, সেগুন বাগিচা, ১ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম
‘মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল ও মানবিক পাঠ্যসূচি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কার্যালয়, সেগুন বাগিচা, ১ আগস্ট। ছবি: আবদুস সালাম

পাঠ্যবই পরিমার্জনে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর প্রভাব বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, যাদের পেছনে বেশি রাজনৈতিক শক্তি কাজ করে, সরকার তাদের কথা আমলে নিতে বাধ্য। সরকার এখন যা করছে, তা কৌশলগত এবং দীর্ঘ মেয়াদে গিয়ে এ গোষ্ঠী পরাজিত হবে।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, জেন্ডার সংবেদনশীল ও মানবিক পাঠ্যসূচি চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘তত্ত্বগত সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করতে গেলে যে ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রয়োজন হয়, সেই পরিস্থিতিটা আমরা এনে দিতে পারছি না। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী সেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারছে। তারা তো বলতে পারছে আমার তো রাজনৈতিক (ক্যাপিটাল) শক্তি অনেক বেশি। নারীরা যখন বলবে আমার রাজনৈতিক (ক্যাপিটাল) শক্তি আরও বেশি, আমরা এগুলো চাই, তখন আমরা শুনতে বাধ্য হব।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষায় মোটা অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করলে ভবিষ্যতে যে সুফল পাওয়া যাবে, তা অকল্পনীয়। শিশু ও শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা এখন প্রাণহীন বলে জানান লেখক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষকে শিশু বয়স থেকে প্রাণবন্ত করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, শিক্ষায় কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে এগিয়ে আছে। পাঠ্যবইয়ে ভবিষ্যতে যে কাঠামো আসবে, তা অনেক প্রত্যাশা পূরণ করবে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সদস্য মফিদুল হক শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন।
আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রেখা চৌধুরী। এতে বিজ্ঞানভিত্তিক, অসাম্প্রদায়িক, নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় মাদ্রাসার পাঠ্যসূচির পরিবর্তন এবং কওমি শিক্ষা আধুনিকায়নের সুপারিশ করা হয়।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির, উদীচীর সভাপতি সফিউদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) আবদুল মান্নান, এনসিটিবির সদস্য মো. মশিউজ্জামান প্রমুখ।