শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যারোসল বিতরণে ধীরগতি

ডিএসসিসির নগর ভবনে মজুত করে রাখা অ্যারোসল ক্যান।  ছবি: প্রথম আলো
ডিএসসিসির নগর ভবনে মজুত করে রাখা অ্যারোসল ক্যান। ছবি: প্রথম আলো

ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন নগরবাসী। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য মশা মারার দুই লাখ অ্যারোসল ক্যান কিনছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এরই মধ্যে সোয়া লাখ ক্যান পৌঁছে গেছে সংস্থার ভান্ডারে। ডিএসসিসির সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন দিনে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ১০ হাজার ক্যান। যে গতিতে কার্যক্রম চলছে, তাতে এসব ক্যান বিতরণ শেষ করতে কয়েক মাস সময় লেগে যাবে।

গত ২৯ জুলাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে ক্যান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। সেদিন সুরিটোলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে স্প্রের কার্টন তুলে দেন তিনি। তখন মেয়র বলেছিলেন, ডিএসসিসির অঞ্চল-৪-এর অন্তর্গত ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি বিতরণ করা হলো।

তবে সেদিন কোন ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অ্যারোসল ক্যান বিতরণ করা হয়েছে, সেই তথ্য দিতে পারেনি ডিএসসিসির ভান্ডার ও ক্রয় বিভাগ। ভান্ডার ও ক্রয় কর্মকর্তা (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) লিয়াকত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ৩২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদারের কাছে আছে। পরে ইউসূফ আলী সরদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটি ভান্ডার ও ক্রয় বিভাগ থেকে বিতরণ করা হয়। তাদের কাছেই এই তথ্য থাকার কথা। তবে ইউসূফ আলী সরদার জানান, গত তিন দিনে সুরিটোলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মহানগর মহিলা কলেজ ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্যান বিতরণ করা হয়েছে।

ডিএসসিসির ভান্ডার ও ক্রয় বিভাগ সূত্র জানায়, বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য দুই লাখ অ্যারোসল ক্যান কেনার পরিকল্পনা আছে। ২৯ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার ২০০টি ক্যান ক্রয় করা হয়েছে, যা নগর ভবনে আছে। শিগগিরই বাকিগুলো চলে আসবে। সূত্রটি আরও জানায়, ৩০ জুলাই ৮ হাজার ১৯২টি বিতরণ করা হয়েছে। ৩১ জুলাই বিতরণ করা হয়েছে ৮০টি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ৭৯২টি।

>

কেনা হবে মশা মারার ২ লাখ অ্যারোসল ক্যান
 এরই মধ্যে কেনা হয়েছে ১ লাখ ২৫ হাজার ২০০টি

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসসিসির একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, যে গতিতে বিতরণ কার্যক্রম চলছে, তাতে কয়েক মাসেও এই কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হবে না। তাঁরা আরও বলেন, কিছুদিন পরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ঈদের দীর্ঘ ছুটি শুরু হয়ে যাবে। এর আগেই বিতরণ কার্যক্রম শেষ করা দরকার।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত ডিএসসিসির পাঁচটি অঞ্চলের মধ্যে অন্তত তিনটিতে ক্যান পৌঁছায়নি। জানতে চাইলে ডিএসসিসির অঞ্চল-২–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর অঞ্চলে অ্যারোসল ক্যানের বিতরণ কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। তাঁরা ক্যানের অপেক্ষায় আছেন।

অঞ্চল-৩–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর বলেন, ‘বিতরণের কথা আমি শুনেছি। আমার এলাকার আমার মাধ্যমে বিতরণ হয়নি। অন্য কারও মাধ্যমে হয়েছে কি না জানা নেই।’ অঞ্চল-৫–এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামছুল হকও জানান, তিনি এখনো ক্যান পাননি।

অ্যারোসল ক্যান বিতরণে ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন প্রথম আলোকে বলেন, বিতরণে গতি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে তাঁদের। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুলো বিতরণ করা হবে। তবে যেসব স্থানে তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছানোর দরকার, সেখানে সরবরাহ করা হয়েছে।