কাউন্টারে তালা, টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠে বিপাকে যাত্রীরা

মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার

নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশনে পৌঁছে টিকিটের জন্য কাউন্টারে জড়ো হন যাত্রীরা। টিকিট কাটতে গিয়ে দেখেন, কাউন্টারে তালা, ভেতরে নেই কোনো টিকিট বিক্রেতা। ট্রেন চলে আসায় বাধ্য হয়ে টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ওঠেন তাঁরা। গন্তব্যে পৌঁছানোর পর বিনা টিকিটে রেল ভ্রমণের দায়ে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। গতকাল শনিবার গভীর রাতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী অন্তত পাঁচজন যাত্রী প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে আসা আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে করে সিলেট যাওয়ার জন্য শনিবার দিবাগত রাত পৌনে চারটায় কুলাউড়া রেলস্টেশনে যান তাঁরা। আগে থেকেই কাউন্টারের সামনে আরও ১০-১৫ জন যাত্রী টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায়, ভেতরে বাতি জ্বলছে, পাখা ঘুরছে, কিন্তু কোনো টিকিট বিক্রেতা নেই। দরজার বাইরে ঝুলছে তালা। টিকিট বিক্রেতার খোঁজ করতে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে গেলে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি পয়েন্টম্যান আবদুল খালিক। এ সময় ট্রেন চলে এলে বাধ্য হয়েই ট্রেনে উঠে পড়েন যাত্রীরা।

কিন্তু সিলেট পৌঁছানোর পর ভোগান্তিতে পড়তে হয় এই যাত্রীদের। বিনা টিকিটে রেলভ্রমণের কারণে স্টেশনের ফটকে তাঁদের আটকে রাখেন নিরাপত্তাকর্মীরা। পরে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বললে ছাড়া পান তাঁরা।

ভুক্তভোগী এক যাত্রী কুলাউড়া পৌর শহরের বাসিন্দা সুমন আলম বলেন, অসুস্থ মাকে নিয়ে সিলেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে যাচ্ছিলেন তিনি। কাউন্টারে গিয়েও টিকিট কিনতে না পারায় বাধ্য হয়েই টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠেন তিনি। পরে সিলেট স্টেশনে নেমে ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাঁকে। তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই কুলাউড়া স্টেশনে নানা দুর্ভোগের বিষয়ে বলতেন। এবার নিজেই এ পরিস্থিতিতে পড়লাম। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারি দরকার।’

কুলাউড়া স্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শনিবার রাতে টিকিট কাউন্টারে প্রধান বুকিং সহকারী মো. মহসীন ও কর্তব্যরত মাস্টার হিসেবে সহকারী স্টেশন মাস্টার পার্থ তালুকদার দায়িত্বে ছিলেন। অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে রোববার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।

জানতে চাইলে কুলাউড়া রেল স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার মুহিব উদ্দিন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, নির্ধারিত সময়ে মাস্টার না থাকার বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। বুকিং সহকারীরা রেলের বাণিজ্যিক বিভাগের আওতাধীন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।