মেয়েকে বাঁচাতে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন বাবা

কুড়িগ্রাম
কুড়িগ্রাম

শ্বশুরবাড়িতে মেয়েকে নির্যাতন করা হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে মেয়েকে বাঁচাতে এসেছিলেন বাবা জহুর আলী আলম। মেয়ের ওপর করা নির্যাতনের প্রতিবাদ করলে তাঁকেও পেটাতে শুরু করেন মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পরে বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় মারা যান তিনি।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের শিবনাথের বস ঝাকুয়াবাড়ী গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল শনিবার রাতে। এ বিষয়ে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ ইউনিয়নের শিবনাথের বস ঝাকুয়াবাড়ী গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে মমিনুর রহমানের সঙ্গে আট বছর আগে বিয়ে হয় জহুর আলীর মেয়ে মহসিনা খাতুনের। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মহসিনাকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। দুই মাস আগে স্বামী মমিনুর কাজের খোঁজে ঢাকায় গেলে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। গতকাল শনিবার মহসিনাকে বেধড়ক মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। খবর পেয়ে মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে আসেন জহুর আলী। এ সময় কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মহসিনার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফেরার পথে রাস্তায় পড়ে গিয়ে আকস্মিকভাবে মারা যান তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। পরে শনিবার রাতেই জহুর আলীর মেয়ে মহসিনা বাদী হয়ে নাগেশ্বরী থানায় ছয়জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন মহসিনার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আজ রোববার তাঁকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন কবীর প্রথম আলোকে বলেন, জহুর আলীর মেয়ে মহসিনা ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। রোববার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।