জেল সুপার প্রশান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ

দুদক
দুদক

চট্টগ্রাম কারাগারের সাবেক সিনিয়র জেল সুপার (বর্তমানে বরিশালের জেল সুপার) প্রশান্ত কুমার বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রোববার সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুপের নেতৃত্বে একটি দল।

দুদকের জনসংযোগ বিভাগ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রশান্ত কুমার বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। চট্টগ্রাম কারাগারের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এই জিজ্ঞাসাবাদ।

এর আগে গত ২৮ জুলাই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। ওই দিন তলব করা হয় সিলেটের ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিককে। ডিআইজি প্রিজনসকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁকে নিয়ে অভিযানে বের হয় দুদক দল। তাঁর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয় ৮০ লাখ টাকা। পার্থকে নিয়ে ব্যস্ততার কারণে প্রশান্ত কুমার বণিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি দুদক। তাই নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়।

দুদক সূত্র জানায়, গত বছরের অক্টোবরে ভৈরবে গ্রেপ্তার হন চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাস। সেখানে তল্লাশির একপর্যায়ে তাঁর দুটি ব্যাগ থেকে থেকে ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, ২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রিসিট (এফডিআর), ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক, বিভিন্ন ব্যাংকের ৫টি চেক বই, একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা ও ১২ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় উঠে আসে চট্টগ্রামের ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিক ও বরিশালের জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিকের নাম। দুদকের পক্ষ থেকে অনুসন্ধান শুরু হয়। পরে পার্থকে বদলি করা হয় সিলেটে, প্রশান্তকে বরিশালে।

টাকাসহ গ্রেপ্তার হওয়া ডিআইজি পার্থ বর্তমানে দুদকের মামলায় কারাগারে আছেন।

দুদকের অনুসন্ধান বলছে, চট্টগ্রামের ডিআইজি প্রিজনস থাকার সময় পার্থ গোপাল বণিক দুর্নীতি আর অনিয়মকে ব্যাপকভাবে প্রশ্রয় দিয়েছেন। প্রতিদিন সেখানে গড়ে ৩০ লাখের বেশি টাকা অবৈধভাবে আদায় হতো। আর সেটা বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ-বাঁটোয়ারা হতো। এ কাজে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক ও জেল সুপার সোহেল রানা। দুদকের তথ্যমতে, বন্দীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, বন্দী বেচাকেনা, হাসপাতালে ভর্তি, ক্যানটিনের অবৈধ আয়, মাদক-বাণিজ্য থেকে ওই সব অর্থ আসত। আর ওই সব অর্থ আনুপাতিক হারে সংশ্লিষ্ট সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো।