বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার যুবকের

ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলার আসামি সজীব আহম্মেদ। ছবি: প্রথম আলো
ছুরিকাঘাতে হত্যা মামলার আসামি সজীব আহম্মেদ। ছবি: প্রথম আলো

রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় বিয়ের আসরে কনের বাবাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বখাটে যুবক সজীব আহম্মেদ ওরফে রকি।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত গত শুক্রবার আসামি সজীবের জবানবন্দি রেকর্ড করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি এখন কারাগারে আছেন।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জবানবন্দিতে সজীব আদালতের কাছে দাবি করেছেন, বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার দিলু রোডের প্রিয়াঙ্কা কমিউনিটি সেন্টারের নিচতলায় কনের বাবা তুলা মিয়াকে (৫৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তুলা মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে সুজন মিয়া বলেন, তাঁর মা মারা যাওয়ার পর চার বছর আগে তাঁর বাবা ফিরোজা বেগমকে বিয়ে করেন। ফিরোজার আগের ঘরের মেয়ে তাঁর সৎবোনের নাম ফাতেমা আক্তার স্বপ্না। তাঁর বাবা সৎ মা ও বোনকে নিয়ে বড় মগবাজার এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। ফাতেমাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন সজীব আহম্মেদ। তিনি বখাটে ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির হওয়ায় তাঁর সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হননি তাঁরা। কিন্তু তাঁর বাবা, সৎ মা ও বোনকে রাস্তাঘাটে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিলেন সজীব। ফাতেমার সঙ্গে অশ্লীল ভাষায় কথাও বলেছেন তিনি। এ নিয়ে গত ৮ মার্চ তাঁর বাবা তুলা মিয়া হাতিরঝিল থানায় সজীবের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পরে তিনি জামিনে বেরিয়ে আসেন। আবারও ফাতেমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় ক্রমাগতভাবে তাঁদের হুমকি দিয়ে আসছিলেন সজীব।

মামলায় সুজন মিয়া আরও বলেন, পারিবারিকভাবে ফাতেমার বিয়ে ঠিক হয়। দিলু রোডের প্রিয়াঙ্কা কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে অতর্কিতভাবে তাঁর বাবা তুলা মিয়াকে ছুরিকাঘাত করেন সজীব। এতে ঘটনাস্থলে তাঁর বাবা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাঁকে আল বারাকা কিডনি অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে তিনি মারা যান।

আদালতে সজীব দাবি করেছেন, ফাতেমার সঙ্গে তাঁর প্রেম ছিল। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তুলা মিয়াকে হত্যা করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে ঢুকে তুলা মিয়াকে হত্যার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন বখাটে যুবক সজীব। অনেক দিন থেকে ফাতেমাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন তিনি।

অভিযুক্ত আসামি সজীব আহম্মেদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলায়। তিনি মগবাজারের বাটার গলিতে থেকে গ্যারেজে কাজ করতেন।