পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে কিশোর মুহাম্মদ সাব্বির উদ্দিন (১৬) হত্যা মামলার তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিবার। সুষ্ঠু তদন্ত ও মূল হোতাদের আইনের আওতায় আনতে তাঁরা মামলার তদন্ত ভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) অথবা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলা সদরের একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাব্বিরের বোন জাহিন সোলতানা। তিনি তাঁর বাবার পক্ষে এই বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখত বক্তব্যে বলা হয়, সাব্বির হত্যার ঘটনায় আসামি গ্রেপ্তার নিয়ে পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ড নিয়ে যে বক্তব্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। শুধু মুঠোফোনের লোভে প্রধান অভিযুক্ত একাই সাব্বিরকে হত্যা করেছে সেটা কীভাবে সম্ভব তা বোধগম্য নয়। একজন তরুণ আরেকজন কিশোরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একাই হত্যা করল, এটি প্রশ্নবিদ্ধ। 

সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, প্রধান অভিযুক্তকে রিমান্ডে আনলেও তাঁকে পর্যাপ্ত জিজ্ঞাসাবাদ না করে শুধু এক দিনের মাথায় কারাগারে প্রেরণের বিষয়টি রহস্যজনক। সাব্বির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরও একাধিক ব্যক্তি জড়িত। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ দিন হলেও তদন্তে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। 

হত্যাকাণ্ডটির আরও অধিকতর তদন্ত, মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে মামলাটি পুলিশের সিআইডি কিংবা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করার জন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আবেদন জানান।

এ সময় অন্যদের মধ্যে সাব্বিরের বাবা মুহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, মা জেনি আকতার, ভাই মুহাম্মদ সাহান ও নিকটাত্মীয় মো. বেলাল উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, উপজেলা সদরের চৌধুরী ভবনের বাসিন্দা সাহাব উদ্দিনের ছেলে কিশোর সাব্বির উদ্দিন গত ২৫ জুলাই নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর বন্ধু, আত্মীয়-স্বজনের কাছে তার কোনো খোঁজ না পাওয়ায় বাবা সাহাব উদ্দিন থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন। নিখোঁজের এক দিন পর ২৬ জুলাই বিকেলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কের পাইন্দং কারবাল্লা টিলা নামক স্থানে টিলার পাদদেশে গলাকাটা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

গত ৩০ জুলাই একটি স্মার্টফোনের জন্য খুন হয়েছে সাব্বির এমন তথ্য দিয়ে পুলিশ সংবাদ সম্মেলন করে। এতে লিখিত বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) হাটহাজারী সার্কেল মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাসুম। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত তনয় বড়ুয়া (২৩) নামের একজনকে ২৭ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সাব্বিরকে একাই হত্যা করার কথা স্বীকার করেন। 

জানতে চাইলে ফটিকছড়ি থানার ওসি মো. বাবুল আকতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত এখনো শেষ হয়ে যায়নি। সবে শুরু হয়েছে। কোথাও ভুল হলে সাব্বিরের পরিবারের লোকজন আমাদের সহযোগিতা করতে পারে। আমরা খতিয়ে দেখব। অবশ্যই তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে।’