স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু নির্মাণ

সরিষাবাড়ীতে পশ্চিম মালপাড়া গ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি সেতুর স্থানে ইউপি চেয়ারম্যানের উদ্যোগে ও গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় আশপাশের চারটি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি কমল।

পোদলদিঘা ও মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদ এবং মালিপাড়া গ্রাম সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া-মালিপাড়া পাকা সড়কের পশ্চিম মালিপাড়া এলাকায় গত ১৭ জুলাই বানের পানির তোড়ে সেতুসহ সড়কের ৩০ মিটার ভেঙে যায়। এতে সরিষাবাড়ী ও কাজীপুর উপজেলার সড়কপথে যাতায়াত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। উপজেলার পোগলদিঘা, সাতপোয়া ইউনিয়ন, কাজীপুরের মনসুরনগর, চরগ্রীস এই চারটি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের মানুষকে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল।

সরকারি সহায়তার জন্য অপেক্ষা না করে দুই উপজেলার সঙ্গে সড়কপথে যাতায়াতে সেতুবন্ধ করতে ও মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এগিয়ে এলেন পাশের মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক রাজমহর। তিনি ভেঙে যাওয়া এলাকায় একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেবেন বলে মালিপাড়া ও কুমারিয়াবাড়ি গ্রামবাসীকে নিয়ে গত ২৭ জুলাই এক বৈঠকে বসেন। তিনি দুই গ্রামবাসীর কাছে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতুতে কাজ করার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন। দুই গ্রামবাসী চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। ২৮ জুলাই থেকে চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় গ্রামবাসী ইউক্যালিকটাসগাছ কিনে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করেন। প্রতিদিন দুই গ্রামের লোকজন পালা করে কাঠের সেতুতে কাজ করেন। গতকাল রোববার সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হয়। কাঠের সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩০ মিটার ও প্রস্থ ৩ মিটার। সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা।

মনসুরনগর ইউপির চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, মানুষের কষ্ট দেখে তিনি উদ্যোগ নেওয়ার পর গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতুটি তৈরি করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিহাব উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক সেতুটি নির্মাণ করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এটি একটি মহৎ কাজ।

১৪ দলের সমন্বয়কারী সাংসদ মো. নাসিম বলেন, ‘চেয়ারম্যান দুই উপজেলার মানুষের কষ্ট দেখে সেতু নির্মাণ করে দেওয়ায় আমি খুশি। কাঠের সেতু
নির্মাণে স্বেচ্ছাশ্রম দেওয়া গ্রামবাসীকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।’