মাদারীপুরে ডেঙ্গুতে যুবকের মৃত্যু

মাদারীপুরে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রিপন হাওলাদার (৩২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ নিয়ে জেলায় ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

রিপন শিবচরের সন্ন্যাসীরচর ইউনিয়নের রাজার চর গ্রামের হবি হাওলাদারের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারাখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। শুক্রবার সকালে ছুটি নিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন রিপন। রিপনের স্ত্রী ও দুটি কন্যাসন্তান আছে।

হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর গত শুক্রবার দুপুরে রিপনকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন স্বজনরা। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু স্বজনেরা রিপনকে ঢাকায় না নিয়ে বাড়িতে নেন। পরে রোববার রাতে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

রিপনের মৃত্যুর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুরের সিভিল সার্জন সফিকুল ইসলাম।

এর আগে ২ আগস্ট কালকিনিতে নাদিরা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়। তিনি কালকিনি উপজেলার উত্তর কৃষ্ণনগর গ্রামের আলমগীর মোড়লের স্ত্রী। এ ছাড়া ৩০ জুলাই সন্ধ্যায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শারমিন আক্তার (২২) এবং একই দিন রাতে ঢাকায় মারা গেছেন জুলহাস ব্যাপারী (৪৫) নামের আরও এক ব্যক্তি। ২৯ জুলাই রাতে ঢাকার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে মারা যান শিবচরের সলু বেপারীররকান্দি এলাকার বাবু খানের ছেলে ফারুক খান (২২)।

মাদারীপুর সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনই মাদারীপুর সদর হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলার হাসপাতালগুলো থেকে এখন পর্যন্ত ৮০ জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সোমবার বেলা ১টা পর্যন্ত সদর হাসপাতাল, কালকিনি ও শিবচর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগী হয়ে ভর্তি আছে ২৫ জন। তাদের বেশির ভাগই ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে আসা। তবে স্থায়ীভাবে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১০ জন।

মাদারীপুর সিভিল সার্জন সফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ডেঙ্গুর ইতিহাস বলে, যে দেশে একবার ডেঙ্গু প্রবেশ করে সেখান থেকে আর ডেঙ্গু যায় না। প্রতিবছরই ডেঙ্গুতে মানুষ আক্রান্ত হয়, তবে এ বছর এর সংখ্যা বেশি। তাই আমাদের সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য আমরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’

এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ৮৯। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও পরিবারের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে প্রথম আলো মৃত্যুর এই হিসাব পেয়েছে। তবে সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।