সংস্কারে স্বস্তি, ভেঙে যাওয়ায় শঙ্কা

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের পানিউমদা সেতুটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। গতকাল সেটি ইট-সুরকি দিয়ে মেরামত করা হয়।  ছবি: আনিস মাহমুদ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের পানিউমদা সেতুটি বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। গতকাল সেটি ইট-সুরকি দিয়ে মেরামত করা হয়। ছবি: আনিস মাহমুদ

দুই সপ্তাহ আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সিলেট অংশের ১২টি স্থানে খানাখন্দ ছিল। গতকাল সোমবার এসব স্থানে গিয়ে দেখা গেছে, খানাখন্দে ইট-বালু ফেলে জরুরি সংস্কার করা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে শ্রমিকেরা সড়ক সংস্কার করছেন। 

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, তুলনামূলকভাবে এখন সড়ক ভালো অবস্থায় রয়েছে। এর ফলে চলাচলে ভোগান্তি অনেকটাই দূর হয়েছে। তবে সংস্কার হলেও যানবাহনের চাপে কিছু কিছু স্থানে ইট-বালু সরে পড়ছে।  ফলে ঈদযাত্রার সময় সড়কটির অবস্থা খারাপ হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।

জানতে চাইলে সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রীতেশ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, এখন মহাসড়ক ভালো রয়েছে। তাই এবার ঈদে ঘরমুখী মানুষদের কোনো ভোগান্তি পেতে হবে না। 

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর জানিয়েছে, মহাসড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ২৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে বৃহত্তর সিলেটের তিন জেলায় পড়েছে ১২৩ কিলোমিটার। এই ১২৩ কিলোমিটারের মধ্যে ৮২ কিলোমিটার হবিগঞ্জে, ৩৮ কিলোমিটার সিলেটে এবং ৩ কিলোমিটার মৌলভীবাজার জেলায় পড়েছে। গত দুই সপ্তাহ আগের তথ্য অনুযায়ী, সিলেট অংশের ১২৩ কিলোমিটারের মধ্যে সাড়ে চার কিলোমিটার অংশে খানাখন্দ ছিল। এখন সব মিলিয়ে আধা কিলোমিটারের কম অংশে খানাখন্দ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের সৈয়দপুর, আউশকান্দি, রুস্তুমপুর, সদরঘাট, দেবপাড়া, পানিউমদা ও বড়চর এবং বাহুবলের আব্দানাড়াইল ও মিরপুর এলাকার খানাখন্দে ইট-বালু ফেলে সংস্কার করা হয়েছে। তবে দেবপাড়া ও আব্দানাড়াইল অংশে এরই মধ্যে এসব ইট-বালুর অধিকাংশই উঠে যাচ্ছে। এ ছাড়া সিলেটের লালাবাজার ও বাহাপুর এবং মৌলভীবাজারের শেরপুর অংশও সংস্কার করা হয়েছে। 

এখন মহাসড়কটি অনেকটাই ভালো অবস্থায় রয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। তবে নির্বিঘ্ন চলাচলের স্বার্থে কেবল সংস্কার নয়, দ্রুত মহাসড়কের খানাখন্দ থাকা অংশ পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। 

মহাসড়কের পার্শ্ববর্তী দিগাম্বারপুর গ্রামের কৃষিজীবী মো. আবদুল আলী (৫০) বলেন, জরুরি সংস্কারকাজ করায় এখন মহাসড়ক অনেকটাই ভালো রয়েছে। তবে স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য মহাসড়কের ভাঙাচোরা অংশ পুনর্নির্মাণ করা প্রয়োজন। 

আশপাশের আরও কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, ঈদ উপলক্ষে সওজ কোনো রকমে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করছে। এটি আরও টেকসই করার স্বার্থে ভাঙা অংশ পুনর্নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ঈদের পরপরই সওজ সে ব্যাপারে উদ্যোগ নেবে বলে তাঁরা প্রত্যাশা করছেন। 

মহাসড়কের নবীগঞ্জ উপজেলা অংশে অবস্থিত পানিউমদা এলাকার ব্রিজটি খুব বেশি বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। এটি অনেকটাই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে সেতুটি সংস্কারে অন্তত আটজন শ্রমিককে সংস্কারকাজ করতে দেখা গেছে। শ্রমিকেরা বলেন, কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ না রেখে ফাঁকে ফাঁকে সেতুর সংস্কারকাজ চলছে। আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই সেতুটি চলাচলের জন্য পুরোপুরি উপযোগী হয়ে পড়বে।