দুই শিশুর হাতে হাতকড়া
পরনে সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট। মাথায় টুপি। ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী দুই শিশু। দুজনের হাতে হাতকড়া। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছে না তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় এই চিত্র দেখা গেছে। তাদের পাশে দড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ সদস্যরা।
দুই শিশুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরের আকবরশাহ ও কোতোয়ালি থানায় ইয়াবা ও অস্ত্র (ছুরি) উদ্ধারের ঘটনার পৃথক দুটি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তিন মাস ধরে তারা গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে রয়েছে। সেখান থেকে গতকাল হাজিরার জন্য চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়।
চট্টগ্রাম শিশু আদালতের সাবেক সরকারি কৌঁসুলি এম এ ফয়েজ প্রথম আলোকে বলেন, শিশু আইন অনুযায়ী, শিশুকে হাতকড়া পরানো বেআইনি। জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। শিশু আইনের ৪৪ ধারায় বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারের পর কোনো শিশুকে হাতকড়া বা কোমরে দড়ি লাগানো যাবে না। আর আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে সব ব্যক্তি শিশু হিসেবে গণ্য হয়।
মামলার আসামি শিশুদের গাজীপুর থেকে চট্টগ্রামে হাজিরার জন্য নিয়ে আসেন পুলিশ কনস্টেবল মো. রোয়ান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরা পালিয়ে যেতে পারে। এ জন্য হাতকড়া পরানো হয়েছে। দড়ি রাখা হয়েছে। শিশুদের হাতকড়া পরানো বেআইনি জানেন কি না প্রশ্ন করা হলে পুলিশ সদস্য বলেন, ‘এত কিছু বুঝি না। পালালে আমার ক্ষতি হবে।’
শিশুদের হাতকড়া পরানোর বিষয়ে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এই পুলিশ সদস্য চট্টগ্রামের না। গাজীপুর থেকে আসা পুলিশ এটা করেছে। দেখে ব্যবস্থা নেব।’
এক শিশুর মা রেহেনা বেগম বলেন, এতটুকু বয়সের বাচ্চারা কি পুলিশ থেকে পালাতে পারে?