ভালুকার দুই কিলোমিটার সড়কে চরম ভোগান্তি

দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় কার্পেটিং উঠে গেছে। বৃষ্টির পানি জমে এভাবেই স্থানে স্থানে জলাশয়ে পরিণত হয় সড়কটি। সম্প্রতি ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি-কাশর ডুবালিয়াপাড়া সড়কে।  প্রথম আলো
দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কার না করায় কার্পেটিং উঠে গেছে। বৃষ্টির পানি জমে এভাবেই স্থানে স্থানে জলাশয়ে পরিণত হয় সড়কটি। সম্প্রতি ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি-কাশর ডুবালিয়াপাড়া সড়কে। প্রথম আলো

ভালুকার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ড থেকে কাশর ডুবালিয়াপাড়া মোড় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা বেহাল। সড়কে কার্পেটিং উঠে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার হাজার হাজার মানুষকে।

উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙাচোরা। সড়কের দুই পাশে রয়েছে স্কুল-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত হাজার হাজার শ্রমিকের এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, শিল্পাঞ্চল খ্যাত উপজেলার স্কয়ার মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে রাস্তাটির শুরুতেই বড় বড় চারটি গর্তে ময়লা ও কাদাযুক্ত পানি জমে আছে। লোকজন জুতা হাতে নিয়ে গর্তে জমাটবাঁধা পানি মাড়িয়েই পথ চলছেন। এ সময় একটি কাভার্ড ভ্যানের চাকা সড়কের গর্তে আটকে থাকার দৃশ্য চোখে পড়ে। ভাঙা দুই কিলোমিটার সড়কের শুরুতেই আবদুল গণি মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ ছাড়া সড়কের অন্য অংশের পাশে রয়েছে মাদ্রাসাসহ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। মাঝেমধ্যে বড় যানগুলোর চাকা গর্তে পড়ে ময়লাযুক্ত পানি শিক্ষার্থীদের জামায় ছিটে যাচ্ছে।

স্থানীয় অন্তত ১৫ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাঁরা বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য নালার ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই সড়কের গর্তে পানি আটকে থাকে। এ অবস্থায় বিভিন্ন মিল-কারখানার মালবাহী ভারী ট্রাক, লরি চলাচল করায় খানাখন্দের আকার এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। শিল্প এলাকার সড়কটিতে কারও নজর নেই। প্রতিদিন সবাইকে কষ্ট করে এই সড়কে যাতায়াত করতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল ফকির জানান, রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার শ্রমিক বাড়ি ভাড়া নিয়ে থেকে বিভিন্ন মিল-কারখানায় কাজ করেন। বেহাল রাস্তার কারণে তাঁদের সবাইকেই কর্মস্থলে যেতে অসুবিধা হচ্ছে।

আবদুল গণি মাস্টার স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা আক্তার বলে, সড়কে খানাখন্দ ও জলাবদ্ধতার কারণে তারা কষ্ট করে যাতায়াত করে। প্রায়ই যানবাহনের চাকায় কাদা-পানি ছিটকে তাদের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়।

রাস্তা বেহাল হওয়ায় চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন পরিবহনের চালকদেরও। তাঁরা গাড়ি নিয়ে এই পথে যেতে চান না। কাশর গ্রামের পোলট্রি ফার্মের মালিক জামাল উদ্দিন বলেন, ভাঙা রাস্তার কারণে তাঁর খামারে মুরগির খাদ্য নিতে ট্রাকচালকেরা যেতে রাজি হন না। জোর করে রাজি করালেও ভাড়া কয়েক গুণ বেশি চান। কারখানার কাভার্ড ভ্যানের চালক গফুর মিয়া বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময় মাঝেমধ্যেই চাকা গর্তে আটকে যায়।

হবিরবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, ধারণক্ষমতার চেয়েও বেশি ভারী ট্রাক ও লরি চলার কারণে রাস্তা সংস্কার করেও ঠিক রাখা যায় না। নতুন করে ঢালাই দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করা প্রয়োজন।