মাদারীপুরে নার্সিং কলেজের হোস্টেল থেকে ছাত্রীর লাশ উদ্ধার

মৌ দত্তের পরিচয়পত্র। ছবি: সংগৃহীত
মৌ দত্তের পরিচয়পত্র। ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরে ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজের আবাসিক হোস্টেল থেকে মৌ দত্ত (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের ইটেরপুল এলাকায় অবস্থিত ওই প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় তলার ৩০৪ নম্বর কক্ষ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে।

মৌ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কাটাদিয়া এলাকার প্রয়াত অজিত দত্তের মেয়ে। তিনি মাদারীপুর ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজের ডিপ্লোমা অ্যান্ড নার্সিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

পুলিশ ও প্রতিষ্ঠানটির সূত্রে জানা গেছে, ডিডব্লিউএফ নার্সিং কলেজে প্রতিদিন সকাল ৯টায় ক্লাস শুরু হয়। মৌ অন্য সময় সহপাঠীদের সঙ্গে ক্লাসে অংশ নিলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই তিনি হোস্টেলের তাঁর কক্ষের দরজা বন্ধ করে রাখেন। মৌ ক্লাসে না যাওয়ায় সাড়ে ১১টার দিকে সহপাঠীরা এসে তাঁর কক্ষের দরজা ধাক্কা দেন। এ সময় ভেতর থেকে দরজা বন্ধ থাকায় তাঁদের সন্দেহ হয়। পরে সহপাঠীরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মৌকে একটি ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলে থাকা অবস্থায় দেখতে পান। তাঁরা মৌকে মৃত অবস্থায় নিচে নামিয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

মৌর সহপাঠী শাবনুর ও ঝুমকি বলেন, ‘আমরা সকালে মৌকে ক্লাসে যেতে অনুরোধ করি। তখন দেখি মৌ কোনো বিষয় নিয়ে আপসেট (মন খারাপ)। বারবার জানতে চাইলে ও আমাদের কিছু বলেনি। মৌ অনেক ভালো মেয়ে ছিল। আমরা জানি না কেন মৌ এমন করল।’

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মার্গারেট সরজিনী বিশ্বাস বলেন, ‘মৌ খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিল। ওরাই এই প্রতিষ্ঠানের প্রথম ব্যাচ। গত দুদিন থেকে সে ক্লাসে অনুপস্থিত ছিল। কী কারণে এমন ঘটছে, তা বলতে পারছি না। আমরাও তার এমন মৃত্যুতে হতবাক।’

মাদারীপুর সদর থানার কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর শুনেই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। মৌর হোস্টেল কক্ষ থেকে আমরা চারটি চিরকুট উদ্ধার করি। একটি চিরকুটে মৌ তাঁর মা-বাবার উদ্দেশে করে কিছু কষ্টের কথা লিখেছেন। অন্য একটি চিরকুটে মৌর রুমমেট শাবনুর ও ঝুমকির উদ্দেশে কিছু কথা লেখা। শেষ চিরকুটে সে অজানা উদ্দেশে প্রেম সংঘটিত কিছু লিখেছে। এসব দেখে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, মৌ পারিবারিক ও প্রেম সংঘটিত কারণে আত্মহত্যা করতে পারে। এরপরও আমরা লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’ মৌর এ ঘটনায় আজ বিকেল চারটা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।