ফগার দরকার ২০টি আছে মাত্র পাঁচটি

রংপুর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ফগার যন্ত্র দিয়ে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সম্প্রতি নগরের কেরানিপাড়ায়।  ছবি: প্রথম আলো
রংপুর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ফগার যন্ত্র দিয়ে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। সম্প্রতি নগরের কেরানিপাড়ায়। ছবি: প্রথম আলো

রংপুর সিটি করপোরেশনে মশা মারার ওষুধ ছিটানোর জন্য সাতটি ফগার যন্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে দুটি নষ্ট হয়ে গেছে। এত কম যন্ত্র দিয়ে এত বড় এলাকায় মশার ওষুধ ছিটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে করপোরেশনকে। পুরো নগরে মশা মারার জন্য অন্তত ২০টি ফগার যন্ত্র লাগবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বর্তমানে এডিস মশার আক্রমণে সারা দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। স্থানীয়ভাবেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এর মধ্যে গত ২২ জুলাই থেকে রংপুর সিটি করপোরেশনে মশকনিধন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা শাখার সাবেক সভাপতি মলয় কিশোর ভট্টাচার্য বললেন, মশা নিধনে সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসতে হবে। শহর পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। ওষুধ ছিটিয়ে নিয়মিত স্প্রে করতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত উপকরণ করপোরেশনের থাকতে হবে।

সিটি করপোরেশন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, রংপুর সিটি করপোরেশনের আয়তন ২০৩ বর্গকিলোমিটার। ওয়ার্ড ৩৩টি। একটি ফগার যন্ত্র দিয়ে ওষুধ ছিটালে একেকটি ওয়ার্ডে সাত-আট দিন করে লাগবে। সে হিসাবে পুরো নগরে ওষুধ ছিটানোর জন্য অন্তত ২০টি ফগার যন্ত্র দরকার। কিন্তু এ করপোরেশনে আছে মাত্র সাতটি যন্ত্র। এর মধ্যে দুটি নষ্ট। বাকি ৫টি যন্ত্র দিয়ে পুরোনো পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডে কোনোমতে কাজ চালানো সম্ভব বলে মনে করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান বলেন, সাতটি ফগার মেশিনের মধ্যে পাঁচটি ভালো। এই পাঁচ ফগার যন্ত্র দিয়ে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানোর কাজ চলছে পুরো সিটি করপোরেশন এলাকায়। পুরো নগরে ওষুধ ছিটানোর জন্য অন্তত ২০টি ফগার যন্ত্র দরকার।

সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর নগরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ শ্যামাসুন্দরী খালটি দীর্ঘ সময় ধরে সংস্কার না হওয়ায় ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গেছে। কোথাও পানি জমে আছে। নেই পানির প্রবাহ। অনেক স্থানে মানুষজন বাসাবাড়ির বর্জ্য, প্লাস্টিকের পাত্র খালের মধ্যে ফেলেছে। ফলে পুরো খাল মশার উৎপত্তিস্থল হয়ে উঠেছে।

নগরের কেরানীপাড়া এলাকার খালপাড়ের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, এই খালই হলো মশার উৎপত্তিস্থল। অথচ এই খালের কোনো সংস্কার করা হয় না। দেশব্যাপী ডেঙ্গু রোগ দেখা দেওয়ায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশকনিধনে ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু হয়েছে। এখন মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলাও ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে।

নুরপুর এলাকার বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম বলেন, মশার আক্রমণে যেভাবে ডেঙ্গু রোগ দিন দিন বাড়ছে, তাতে খালের জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

জানতে চাইলে করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, করপোরেশনের আগের ফগার যন্ত্রগুলো নষ্ট ছিল। তিনি নতুন করে পাঁচটি যন্ত্র কিনেছেন। এগুলো দিয়ে নগরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ওষুধ ছিটানো চলছে। এ ছাড়া জনসচেতনতা বাড়াতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ৩৩টি ওয়ার্ডে সভা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ অব্যাহত আছে।