সদরঘাটে হাজারো মানুষের ভিড়

সদরঘাট । ফাইল ছবি
সদরঘাট । ফাইল ছবি

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বৃষ্টি ও যানজট উপেক্ষা করে নদীপথে ঘরমুখী হাজার হাজার মানুষ আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়ছেন। তাই দুপুর থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ভিড় বাড়তে থাকে যাত্রীদের। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ১০ আগস্ট শনিবার তৈরি পোশাক ও শিল্পকারখানা ছুটি হলে সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে। এদিকে যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টার্মিনাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

আজ ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় দেখা গেছে, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কর্মজীবী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে বেলা দুইটার পর। বিআইডব্লিউটিসির রকেট সার্ভিসের যাত্রীরা আগেভাগে চলে আসায় বাদামতলী ঘাট এলাকার সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়।

মোরেলগঞ্জগামী বিআইডব্লিউটিসির রকেট সার্ভিস পিএস টার্নের যাত্রী মিনহাজুর রহমান জানান, বৃষ্টির মধ্যে ভিজে গুলিস্তান থেকে রিকশায় করে বাদামতলী ঘাট এলাকায় আসতে হয়েছে। কিন্তু সদরঘাট থেকে বাদামতলী আসার পথে দুপাশে ফলের দোকান ও ফলবাহী যানবাহনের পার্কিংয়ের কারণে প্রচণ্ড যানজটে পড়তে হয়েছে। জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করে অন্তত ঈদের সময় এসব এলাকায় রাস্তার ওপর অবৈধ ফলের দোকান উচ্ছেদ করা দরকার ছিল।

ভান্ডারিয়াগামী এমভি রাজদূত লঞ্চের যাত্রী শিলা বেগম বলেন, ‘আমাদের লঞ্চ ছাড়বে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। বৃষ্টির কারণে মিরপুর-১২ থেকে অটোরিকশায় করে দুপুর আড়াইটার মধ্যে সদরঘাটে চলে আসি। যানজটের কারণে ভিক্টোরিয়া পার্ক থেকে সদরঘাট এলাকায় আসতে প্রায় আধা ঘণ্টা সময় লেগেছে। ঈদের সময় যানজট নিরসনের ট্রাফিকের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন বলেন, সদরঘাট ও বাদামতলী এলাকায় আসা নদীপথের যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে যানজট নিরসনে বাদামতলী এলাকায় রাস্তার ওপর ফলের দোকান উচ্ছেদের বিষয়টি একাধিকবার কোতোয়ালি থানার ট্রাফিক পুলিশকে জানানো হয়েছে। যাত্রীদের বন্দরে যাতায়াত, নৌযান চলাচলের সুবিধা ও সচেতনতার জন্য নৌযানসংক্রান্ত তথ্যাদি, বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও ডিজিটাল স্ক্রিনে প্রচারণাসহ মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রাস্তার ওপর ফলের দোকান বসালে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাহিদুর রহমান। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে সদরঘাট টার্মিনাল ও বাদামতলী এলাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাস্তার ওপরে ফলের দোকান থাকার কথা না। কোনো অবস্থাতেই সড়কের পাশে হকার ও ফলের দোকান বসতে দেওয়া যাবে না। ।

নৌ পুলিশের অতিরিক্তর পুলিশ সুপার ফরিদা পারভীন বলেন, সদরঘাট টার্মিনাল এলাকা ও বুড়িগঙ্গা নদীতে নৌ যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নৌপুলিশের টহল দল কাজ করছে। এ ছাড়া টার্মিনাল ও পন্টুন এলাকায় ছিনতাই, পকেটমার, অজ্ঞান পার্টি ও কুলি হয়রানি রোধে অতিরিক্ত নৌ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে গত দুদিন ধরে নৌপুলিশ ট্রলার ও স্পিডবোটের মাধ্যমে ফগার মেশিন দিয়ে টার্মিনালের লঞ্চগুলোতে মশা মারার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।

অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল সংস্থার ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম আহ্বায়ক ও অভিযান লঞ্চের মালিক হামজা লাল শেখ বলেন, বৃষ্টির কারণে আজ লঞ্চের যাত্রীদের উপস্থিতি কম। আগামীকাল থেকে যাত্রীদের উপস্থিতি বাড়তে পারে। তবে শনিবার দিন গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানা ছুটি হলে যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে।

এদিকে নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, আজ দক্ষিণাঞ্চলের ৪৩টি রুটের ৭৫-৮০টি যাত্রীবাহী লঞ্চ ছেড়ে যাবে। প্রয়োজনে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিসির রকেট সার্ভিস পিএস টার্ন ও বাঙ্গালী বরিশাল এবং মোরেলগঞ্জের উদ্দেশে সন্ধ্যায় ছয়টার দিকে ঢাকা নদী বন্দর ছেড়ে গেছে।