সড়কপথে দুর্ভোগ আর স্বস্তি মিলিয়ে চলছে ঈদযাত্রা

গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় যানজট। ছবি: সংগৃহীত
গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় যানজট। ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা ছাড়ছেন অসংখ্য মানুষ। ঈদে ঘরমুখী বাড়তি যাত্রী ও গাড়ির চাপে সারা দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলছে। আবার কোথাও কোথাও সেতু বা উড়ালসেতুর কারণে নির্বিঘ্নেই চলছে যানবাহন।

আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বঙ্গবন্ধু সেতুর টাঙ্গাইল অংশে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে করটিয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সেতু পার হওয়ার পর উত্তরবঙ্গের দিকে গাড়ি এগোতে না পারায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় খানাখন্দ আর বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে সিরাজগঞ্জে ওই এলাকার গাড়ির চাপ বেশি থাকায় এই জট দেখা দিচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঈদে ঘরমুখী মানুষ।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গোড়াই ক্যাডেট কলেজ এলাকা থেকে জামুর্কী পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরত্ব। এই অংশের গোড়াই ক্যাডেট কলেজ থেকে সোহাগপুর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার ও জামুর্কী থেকে আছিমতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় থেমে থেমে যানবাহন চলছে। নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া মহাসড়কের এই অংশের কুর্ণী ও কদিমধল্যা এলাকায় নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের উভয় পাশেও থেমে থেমে যান চলায় ঈদে ঘুরমুখো যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ঢাকাগামী ট্রাকের যাত্রী রহমান আলী জানান, সিরাজগঞ্জ থেকে গোড়াই পর্যন্ত অন্য সময় যেখানে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় লাগত, সেখানে আজ শনিবার সময় লেগেছে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী যানবাহনের চালকেরা জানান, গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপও বাড়তে থাকে। একদিকে রয়েছে পশুবাহী ট্রাক, অপরদিকে যাত্রীবাহী যান। গতকাল শুক্রবার সকালে যান চলাচল স্বাভাবিক হলেও দুপুরের পর ঘরমুখো মানুষের চাপ আরও বাড়ে। মহাসড়কের মির্জাপুর অংশের অন্যস্থানে যান চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক থাকলেও গোড়াই এলাকায় নির্মাণাধীন আন্ডার পাসের কারণে দিনভর যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়। তবে রাতে তা আরও বাড়ে। এ ছাড়া রাতে মির্জাপুরের জামুর্কী থেকে শুভুল্যা-কুর্ণী পর্যন্ত থেমে থেমে যানজটের সৃষ্টি হয়।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে যান। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই এলাকার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে থেমে থেমে চলছে যান। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তোলা। ছবি: প্রথম আলো।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোড়াই এলাকায় কথা হয় টাঙ্গাইলের সহকারী পুলিশ সুপার (মির্জাপুর) দীপঙ্কর ঘোষের সঙ্গে। তিনি জানান, মহাসড়কের গোড়াই এলাকায় যান চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক। টাঙ্গাইলের দিকে কিছুটা যানজট আছে। আজ সকালে কদিমধল্যা পর্যন্ত যানজট ছিল। তবে এখন আর তা নেই।

গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে চান্দনা চৌরাস্তা, চন্দ্রা তিমুর এলাকায় যানজট দেখা যায়নি।

ঘরমুখী মানুষের চাপ বাড়লেও এখন পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কোথাও তীব্র যানজট দেখা যায়নি। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভুলতা উড়ালসড়ক খুলে দেওয়া হয়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের ভুলতায় এই উড়ালসড়ক খুলে দেওয়ার পর থেকে সড়কের ওপর যানবাহনের তেমন চাপ দেখা যায়নি। ফলে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গাড়িগুলো যানজট ছাড়াই ভুলতা অংশ পার হতে পারছে।

গত ঈদুল ফিতরে কাঁচপুর দ্বিতীয় সেতু, মেঘনা দ্বিতীয় সেতু ও মেঘনা গোমতী দ্বিতীয় সেতু খুলে দেওয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চলাচল অনেক নির্বিঘ্ন এখন।