ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে

ঈদে দুই শিশুর কোলাকুলি। শাহি ঈদগাহ ময়দান, সিলেট, ১২ আগস্ট। ছবি: আনিস মাহমুদ
ঈদে দুই শিশুর কোলাকুলি। শাহি ঈদগাহ ময়দান, সিলেট, ১২ আগস্ট। ছবি: আনিস মাহমুদ

সারা দেশে আজ সোমবার উদ্‌যাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। দেশের মুসলিম সম্প্রদায় মহান আল্লাহ তাআলার উদ্দেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে অন্যতম প্রধান এই ধর্মীয় উৎসব উদ্‌যাপন করছে।

সকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঈদের নামাজ আদায় করা হয়। নামাজের খুতবায় খতিব কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান করেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিবনির্বিশেষে একত্রে নামাজ আদায় করেন। এরপর কোলাকুলির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এরপর শুরু হয় পশু কোরবানি। কোরবানির পরে সারা দিন ধরে মাংস বিতরণ চলবে দরিদ্র ও দুস্থদের মধ্যে।

পবিত্র ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সকাল আটটায় জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এই জামাতের আয়োজন করেছে। এখানে প্রায় এক লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেছেন। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্য ঈদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা ছিল।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, ঢাকা, ১২ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, ঢাকা, ১২ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা

এ ছাড়া জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জামাত হয়েছে সকাল সাতটায়, দ্বিতীয় জামাত সকাল আটটায়, তৃতীয় জামাত সকাল নয়টায়, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টায় এবং পঞ্চম ও শেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে সাতটায় জামাত হয়েছে। এখানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ, সাংসদ, সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ এলাকার মুসল্লিরা জামাতে অংশ নিয়েছেন। প্রায় একই সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজ শেষে অনেকেই যান কবরস্থানে স্বজনের কবর জিয়ারত করতে। চিরকালের জন্য চলে যাওয়া স্বজনের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে মোনাজাত করেন তাঁরা। বাড়ি ফিরে আল্লাহ তাআলার উদ্দেশে পশু কোরবানি করা হয়।

রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ের পর দুই শিশুর কোলাকুলি । ঢাকা, ১২ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা
রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায়ের পর দুই শিশুর কোলাকুলি । ঢাকা, ১২ আগস্ট। ছবি: হাসান রাজা

প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইব্রাহিম (আ.) নিজের ছেলে হজরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পরিবর্তে একটি দুম্বার কোরবানি হয়ে যায়। হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সেই ত্যাগের মহিমার কথা স্মরণ করে মুসলিম সম্প্রদায় জিলহজ মাসের ১০ তারিখে আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভের জন্য পশু কোরবানি করে থাকেন। আর তার নির্দিষ্ট ভাগ বিতরণ করা হয় দরিদ্রদের মধ্যে।

আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলিমের জন্য পশু কোরবানি করাই উত্তম ইবাদত বলে ধর্মীয়ভাবে বলা হয়েছে। জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদ্‌যাপিত হলেও পরের দুই দিন, অর্থাৎ ১১ ও ১২ জিলহজেও পশু কোরবানি করার বিধান আছে।

কোরবানি ঈদের আনন্দ বেশি দরিদ্র-দুস্থদের জন্য। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির সমুদয় অর্থ এবং কোরবানি দেওয়া পশুর মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ তাদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয়।