যুবলীগ নেতার শটগানের গুলিতে নিহত হন প্রতিপক্ষের দুজন: পুলিশ সুপার

ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিতে ২ জন নিহত এবং ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে ফরিদপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান। আজ রোববার বিকেলে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, পূর্বশত্রুতার জের ধরে ওসমান মিয়ার সঙ্গে যুবলীগ নেতা হানিফ মিয়ার কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় হানিফ মিয়া তাঁর লাইসেন্স করা শটগান দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ২ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শনিবার রাত পৌনে নয়টার দিকে হানিফ মিয়াকে মাদারীপুরের শিবচর বাজার এলাকা থেকে একটি প্রাইভেট গাড়িসহ আটক করা হয়। ওই সময় তাঁর সহযোগী শরীয়তপুর জেলার পালং উপজেলার আড়িগাঁও গ্রামের মো. তাপস আলী (৩০) ও গাড়িচালক মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রুদ্রপাড়া গ্রামের আবদুস সাত্তারকেও (২৩) আটক করা হয়। গাড়ি থেকে একটি শটগান ও ৩৬টি গুলি জব্দ করা হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, বিরোধী এই দুটি পক্ষ একই বংশভুক্ত লোক। তাঁদের মধ্যে বিরোধও চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এই বিরোধ মেটাতে কাজ করবে পুলিশ।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় গতকাল শনিবার দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিতে দুজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন ১৪ জন। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়েছে। কাইচাইল ইউনিয়নের পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেনের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হানিফ মিয়ার বিরোধ চলছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রায়ই ওই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছিল।

নিহত দুজন হলেন রওশন আলী মিয়া (৫২) ও তুহিন মিয়া (২৫)। এ ঘটনায় আহত রায়হান উদ্দিন মিয়া (৬৫), আনিস মীর (২০), গোলাম রসুল বিপ্লব (৩০), গোলাম মওলা (৩০), আবুল কালামকে (৩৫) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অপরদিকে আনিস মিয়া (২৪), ফারুক মাতুব্বর (৪০), চুন্নু মিয়া (৪৮), সুমন মিয়া (২৮) ও বাবলু মিয়াকে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার আজ রোববার দুপুরে কাইচাইল গ্রাম পরিদর্শন করেন। তিনি নিহত দুই ব্যক্তির বাড়িতে যান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও রোববার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি। নিহত দুই ব্যক্তির মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।