শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে ৯৯ ডেঙ্গু রোগী

শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চালু হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা। ছবি: সুহাদা আফরিন
শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চালু হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা। ছবি: সুহাদা আফরিন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সামাল দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। দুদিন আগে ডেঙ্গু চিকিৎসা শুরু হওয়া এ ইনস্টিটিউটে প্রায় ১০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আজ সোমবার ঈদের দিনে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দেখা যায়, ইনস্টিটিউটের একটি ভবনের নিচতলায় ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে। প্রত্যেক রোগীর বিছানায় মশারি টাঙানো। ওয়ার্ডে জুতা খুলে ঢুকতে হয়। সুশান্ত কর্মকার নামের একজন দুদিন আগে ঢাকা মেডিকেলে এসেছিলেন চিকিৎসা নিতে। তাঁকে সম্প্রসারিত এই নতুন জায়গায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এস জি মোগনী মাওলা শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় ইনচার্জ হিসেবে রয়েছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ১০ আগস্ট এখানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২০টি বেড প্রস্তুত রয়েছে। আজ পর্যন্ত রোগী ভর্তি আছেন ৯৯ জন। তিনি জানান, এখানে যত রোগী আছেন তাঁরা সবাই ভালো আছেন।

গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০ জন চিকিৎসককে চারটি প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু চিকিৎসায় সহায়তার জন্য পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৩০ জন চিকিৎসককে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেলে মেডিসিন বিভাগের ৬টি ইউনিট, শিশু বিভাগ ও শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট মিলিয়ে আটটি ইউনিটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেলে ৬৯১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন। ঢাকা মেডিকেলের নার্স জেসমিন জানান, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য ইউনিট সম্প্রসারণ করায় মেডিসিন ওয়ার্ডে চাপ একটু কমেছে।

রামপুরার বাসিন্দা খাদিজা আক্তার ভোর রাত তিনটায় এসে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মেডিকেলে। বারান্দায় পেতে রাখে একটি বেড তিনি পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগেই ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এলাকাতেই ডাক্তার দেখায়ে বাসায় ছিলাম। কালকে রাতে হঠাৎ করে প্রেশার বেড়ে যায়। পরে এখানে এসে ভর্তি হই।’ কামরাঙ্গীরচরের আমজাদ হোসেন গত বৃহস্পতিবার ভর্তি হয়েছেন এখানে। মেডিসিন বিভাগের একটি ইউনিটের বারান্দার মেঝেতে শুয়ে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী বলেন, এখনো জ্বর কমছে না। সঙ্গে বমি, পাতলা পায়খানা হচ্ছে।

ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক কিশোর সাহা প্রথম আলোকে বলেন, জ্বর হলেই মানুষ এখন পরীক্ষা করাতে চলে আসছেন। যাঁরা ভর্তি হয়েছেন এবং সচেতন তাঁরা পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে হাসপাতাল ছাড়তে চান না। প্রতিবেদকের সামনেই এক বাবা তাঁর মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। গতকাল থেকে জ্বর। আতঙ্কিত বোধ করায় হাসপাতালের নিয়ে এসেছেন।