'২০টি ঈদের দিনে শুধু কেঁদেছি'

কারামুক্ত আজমত আলী
কারামুক্ত আজমত আলী

বিনা দোষে ১০ বছর কারাভোগের পর মুক্ত হলেও স্কুলশিক্ষক আজমত আলীর কষ্ট কমেনি। কারাগারে হারিয়ে যাওয়া ১০টি বছর এখনো তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। নানা রোগে আক্রান্ত তিনি। এর মধ্যে তাঁকে মুক্ত করতে পরিবারের সদস্যরা সহায়সম্পত্তি সবই বেচেছেন। সংসারের সবার খাওয়ার খরচ জোগানোই এখন কষ্ট। সংসারের বোঝা টেনে নেবেন—এই বয়স আর অবস্থা কোনোটিই নেই আজমতের।

গত শনিবার সকালে জামালপুর শহরের খুঁপিবাড়ী এলাকায় তাঁর মেয়ের বাসায় সদ্য কারামুক্ত আজমত আলী এসব কষ্টের কথা শোনান।


জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দি এলাকার পাখিমারা গ্রামের স্কুলশিক্ষক আজমত আলীর বয়স এখন ৭৪। ১৯৮৭ সালে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে গ্রামের রেজাউল করিম নিহত হওয়ার পর হত্যা মামলায় তিনি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন। পরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়েও তাঁকে আরও ১০ বছর কারাভোগ করতে হয়। গত ১৬ জুলাই তিনি জামালপুরের কারাগার থেকে মুক্তি পান।

আজমত আলী বলেন, ‘জীবনটাই কেমন জানি হয়ে গেছে। জীবনের সব আনন্দ হারিয়ে গেছে। ১০ বছরে ২০টি ঈদের দিনে শুধু কেঁদেছি। ওই খুনে আমি জড়িত ছিলাম না, শত্রুতা করে মামলায় নাম দিয়েছিল। এখন দেখেন, ঈদে কাউকে কিছু কিনে দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই। জীবনের সব শক্তি কারাগারেই হারিয়ে গেছে। সংসারটা তছনছ হয়ে গেছে।’ মেয়ে বিউটি আক্তার বলেন, ‘বাবাকে মুক্ত করতে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার জমিজমা বিক্রি করতে হয়েছে। এত কিছুর পর বাবাকে পেয়েছি।’