চামড়া সিন্ডিকেটের হোতা আ.লীগের বড় নেতা: রিজভী

রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন দলের কারসাজির কারণেই কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কম । এখানে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই সিন্ডিকেটের নেপথ্যে আওয়ামী লীগের এক বড় নেতা আছেন।

আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

গতকাল সোমবার ছিল পবিত্র ঈদুল আজহা। এবার কোরবানির পশুর চামড়ার কম দাম নিয়ে গতকাল থেকেই আলোচনা চলছে। যাঁরা কোরবানি দিয়েছেন, তাঁরা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।

আজ রিজভী বলেন, কোরবানির পশুর চামড়ার টাকা গরিব, মিসকিন, এতিমদের হক। এই চামড়া বিক্রির টাকা তাদের মাঝেই বিতরণ করার নিয়ম। এটা তাদের ঈদের আনন্দের একটা উৎস। বিএনপি সরকারের সময়ে এ দেশে যে চামড়া কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়।

রিজভী বলেন, ৮০ হাজার টাকা দামের গরুর চামড়ার দাম এখন ২২০ টাকা। এক লাখ টাকার গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২২৫ টাকায়। সব জিনিসের দাম হু হু করে বাড়লেও দফায় দফায় কমতে কমতে ১০ ভাগের ১ ভাগে নেমেছে গরিব-মিসকিনের হক এই কাঁচা চামড়ার দাম। এমন করুণ অবস্থা দেখে নীরব প্রতিবাদ হিসেবে সিন্ডিকেটের কাছে বিক্রি না করে কোরবানির চামড়া মাটির নিচে পুঁতে রাখছেন অনেকে।

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার অজুহাতে অনির্বাচিত আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট চামড়া নিয়ে এ কারসাজি করছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এই চক্রের স্বার্থ রক্ষা করছে নিশুতি সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়ার বর্গফুট প্রতি একটা হাস্যকর দাম বেধে দিয়ে তাদের সহায়তা করছে।’

রিজভীর অভিযোগ, ‘অল্প দামের কারণে চামড়া ব্যাপকভাবে পাচার হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশে। সিন্ডিকেট করে এতিমের হক মারার এ কাণ্ডকারখানা যারা চালাচ্ছে বছরের পর বছর ধরে, এদের হোতা সরকারি দলের এক বড় নেতা।’তবে রিজভী এ নেতার নাম উল্লেখ করেননি।

রিজভী বলেন, ‘যেভাবে পাটশিল্প ধ্বংস করা হয়েছে, ঠিক সেই পথেই ধ্বংস করা হচ্ছে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্প। প্রশ্ন করার কেউ নেই। জবাব দেওয়ার কেউ নেই। সুইস ব্যাংকে আর কত টাকা পাঠানো সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের জনগণ মুক্তি পাবে! আজ সুষ্ঠু নির্বাচনকে দূরে ঠেলে জনগণের সরকার নেই বলেই এভাবে জনগণের সর্বনাশ করা হচ্ছে।’

গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, মানুষ স্বস্তিতে বাড়িতে ফিরেছে। একইভাবে স্বস্তিতেই কর্মস্থলে ফিরে যাবে। নিজ জেলা নোয়াখালীতে এসব কথা বলেন কাদের। আজ কাদেরের এ কথার সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘যত দিন আপনি সড়ক ও যোগাযোগমন্ত্রী আছেন, প্রতিটি ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের নাকের পানি চোখের পানি এক করে ছাড়ছেন।’

শাসক দলের মন্ত্রীদের উদ্দেশ্য করে রিজভী বলেন, তাঁরা মানুষকে মানুষ মনে করেন না, মনে করেন তাঁদের কেনা ক্রীতদাস। কারণ, জনগণের ভোটে তো আর তাঁরা নির্বাচিত হননি!