শ্রীমঙ্গলে বড় হোটেলে পর্যটক আছে, ছোটগুলোতে হতাশা

ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলের চা-বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকেরা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই এলাকা থেকে মঙ্গলবার তোলা। ছবি: শিমুল তরফদার
ঈদের ছুটিতে শ্রীমঙ্গলের চা-বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পর্যটকেরা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই এলাকা থেকে মঙ্গলবার তোলা। ছবি: শিমুল তরফদার

শ্রীমঙ্গলে ঈদের ছুটিতে এবার পর্যটক এসেছেন কম। পর্যটক কম হলেও এখানকার বড় রিসোর্টগুলো মোটামুটি পরিপূর্ণ। কিন্তু ছোট ও মাঝারি হোটেল-রিসোর্টগুলোতে হতাশা বিরাজ করছে।

শ্রীমঙ্গলের সারি সারি চা-বাগানের নয়নাভিরাম দৃশ্য মুগ্ধ করে পর্যটকদের। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই), চা জাদুঘর, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল, বার্ড পার্ক, নীলকণ্ঠ সাত রঙের চা কেবিন, চা-কন্যা ভাস্কর্য, বধ্যভূমি-৭১ সহ নানা পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখেন দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা। এর পাশাপাশি রয়েছে লাল পাহাড়, শঙ্কর টিলা, গরম টিলা, ভাড়াউড়া লেক, ব্রিটিশদের সমাধিস্থল ডিনস্টন ওয়ার সিমেট্রি, হরিণছড়া গলফ মাঠ, সুদৃশ্য জান্নাতুল ফেরদৌস মসজিদ, তীর্থস্থান সুপ্রাচীন নির্মাই শিববাড়ি। চা-বাগানঘেরা উঁচু-নিচু টিলা দেখতে আসেন পর্যটকেরা। তবে এবারের চিত্রটা একটু ভিন্ন।
মঙ্গলবার শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে গিয়ে দেখা গেছে অন্যান্য ছুটির সময়ের চেয়ে পর্যটকেরা অনেক কম। হাতে গোনা পর্যটকেরা বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। দর্শনীয় স্থানে স্থানীয় লোকজনকে ঘুরতে দেখা গেছে।

শহরের গ্রিনলিফ গেস্ট হাউস অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজমের পরিচালক এস কে দাশ সুমন বলেন, ‘এর আগে ঈদের ছুটিতে এত কম অতিথি হয়নি। অন্যান্য সময় আমাদের গেস্ট হাউস পর্যটকে পরিপূর্ণ থাকে।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এখানকার রাস্তাঘাট অত্যন্ত নিম্নমানের। পর্যটকেরা এখানে একবার এলে আর আসতে চান না। তা ছাড়া দেশব্যাপী ডেঙ্গুর প্রভাবে এখানে পর্যটকদের উপস্থিতিটা কম।
বড় হোটেলগুলোর মধ্যে গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, লেমন গার্ডেন টি রিসোর্ট, টি হ্যাভেন রিসোর্টে এ ঈদে ভালোই গেস্ট হয়েছে।
গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফের মহাব্যবস্থাপক আরমান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে আমরা যেমন অতিথি চেয়েছিলাম, তেমন পেয়েছি। আমাদের হোটেল এখন অতিথিতে ঠাসা বলা যায়।’
লেমন গার্ডেন রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী সেলিম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত তাঁদের রিসোর্টে বুকিং রয়েছে।

পর্যটন সেবা সংস্থার আহ্বায়ক ও টি হ্যাভেন রিসোর্টের পরিচালক আবু সিদ্দিক মুসা প্রথম আলোকে বলেন, ঈদ কিংবা বড় কোনো ছুটিতে সারা দেশ থেকে পর্যটকেরা এখানে ছুটে আসেন। তবে এ বছর ডেঙ্গুর প্রভাব, প্রচণ্ড গরম ও বৃষ্টির কারণে পর্যটকেরা এবার শ্রীমঙ্গলে কম আসছেন। বড় হোটেল রিসোর্টগুলোতে পর্যটক উঠলেও, ছোট রিসোর্টগুলোতে তুলনামূলক অনেক কম গেস্ট পাওয়া যাচ্ছে। এতে করে হতাশায় পড়ছেন তাঁরা।
মৌলভীবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) আশরাফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঈদে শ্রীমঙ্গলে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন পর্যটন স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যটকেরা যাতে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’