কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে ভিড়, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

ঈদ শেষ। তবু ঢাকা থেকে রওনা হচ্ছে ঘরমুখী মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো।
ঈদ শেষ। তবু ঢাকা থেকে রওনা হচ্ছে ঘরমুখী মানুষ। বৃহস্পতিবার দুপুরে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো।

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। একদিকে ঢাকামুখী যাত্রীরা গন্তব্যে পৌঁছতে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ভিড় করছে, অন্যদিকে ঈদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো ঢাকা থেকে রওনা হচ্ছে ঘরমুখী মানুষ।

কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে শিমুলিয়াগামী প্রতিটি নৌযানে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বৈরী আবহাওয়া থাকায় কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। পাশাপাশি দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও লঞ্চ ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। ঢাকামুখী মানুষের ভিড় গত বুধবারের তুলনায় আজ কম। তবে এখনো ঢাকা থেকে ফিরছে ঘরমুখী মানুষ। বৈরী আবহাওয়া ও পদ্মায় প্রবল ঢেউ, স্রোত থাকায় ফেরিতে যাত্রীদের চাপ তুলনামূলক বেশি। লঞ্চ ও স্পিডবোট ঘাটে ভাড়ার তালিকা টাঙানোর নিয়ম থাকলেও ঘাটের কোনো অংশেই তা চোখে পড়েনি। এ ছাড়া ফেরি ও লঞ্চ পদ্মা নদীতে চলাচলরত অবস্থায় স্পিডবোটে যাত্রী তোলা নিষিদ্ধ থাকলেও লঞ্চ ও ফেরির পেছনে স্পিডবোট থামিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের তোলা হচ্ছে।
সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, কাঁঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া স্পিডবোটের ভাড়া ১২০ টাকা। তবে যাত্রীদের চাপ থাকায় নেওয়া হচ্ছে ২০০ টাকা। অন্যদিকে ধারণক্ষমতার চেয়েও প্রতিটি স্পিডবোটে ৫ থেকে ৬ জন করে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা হচ্ছে। লঞ্চে ৩৫ টাকা ভাড়া হলেও আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা।

ঢাকাগামী যাত্রী মো. সাকিব বলেন, ‘ঈদে যখন শিমুলিয়া থেকে কাঁঠালবাড়ি এলাম, তখনো দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় লঞ্চে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পাড়ি দিতে হয়েছে। তখন পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি।’

স্পিডবোটে শিমুলিয়াগামী যাত্রী আরিফুর রহমান বলেন, ‘ঝুঁকি থাকার পরেও দ্রুত পদ্মা পাড়ি দিতে স্পিডবোটে উঠেছি। ১২০ টাকার ভাড়া গুনতে হলো ২০০ টাকা। ভাড়া বিষয় বলে আর হবে কী? প্রতিবাদ করলেও প্রতিকার নেই। আমরা এসব নৌযানের কাছে এখন জিম্মি হয়ে আছি।’

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকা ছাড়ছে একটি ফেরি।  ছবি: প্রথম আলো।
মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট এলাকা ছাড়ছে একটি ফেরি। ছবি: প্রথম আলো।

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্র জানায়, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াতের জন্য কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ ব্যবহার করছে। ঈদে যাত্রীসেবায় ২১টি ফেরি, ৮৭টি লঞ্চ, দেড় শতাধিক স্পিডবোট রাখা হয়েছে। এ ছাড়া তিন শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। পাশাপাশি সিসিটিভির মাধ্যমে ঘিরে রাখা হয়েছে পুরো কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট। তবে সচেতন অনেক যাত্রী লঞ্চ ও স্পিডবোটের পরিবর্তে ফেরিতে পার হচ্ছেন। এ ছাড়া যাত্রীদের চাপ সামলাতে পুরোনো কাওড়াকান্দি লঞ্চঘাট চালু রাখা হয়েছে।

কাঁঠালবাড়ি ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির পরিদর্শক আক্তারুজ্জামান বলেন, সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। তাই যাত্রীদের চাপ কিছুটা কম। দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে যাত্রীরা ফেরিতে পার হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক ঘাট এলাকায় আছেন। অতিরিক্ত যাত্রী বহন ও বেশি ভাড়া নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো. সালাম মিয়া বলেন, ‘যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে আমরা সব কটি ফেরি সচল রেখেছি। পদ্মায় ঢেউ থাকার কারণে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীরাই বেশি পার হচ্ছে ফেরিতে।’