রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড কঠিন হয়ে পড়েছে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে একটা কঠিন সময়। ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন-নিপীড়নে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

গাজীপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল করিম আজ শনিবার বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এই যোগদান অনুষ্ঠান হয়। সেই যোগদান অনুষ্ঠানেই এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

আবদুল করিমকে স্বাগত জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের ২৬ লাখ মানুষ আসামি, এক লাখ মামলা হয়েছে, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এ সময় আবদুল করিমের বিএনপিতে যোগদান একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তাঁর এই যোগদান আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে যে আমরা সঠিক পথেই আছি।’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের সামনে কঠিন কাজ। জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর অনেকেই মনে করেছিল, বিএনপি ধ্বংস হয়ে যাবে। সেই বিএনপিকে খালেদা জিয়া জাগিয়ে তুলেছেন। তিনবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আজ সেই নেত্রী কারাগারে আবদ্ধ।’

সরকারের বিরুদ্ধে অন্যায় ও নিপীড়নের অভিযোগ এনে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ তারা রাজনৈতিকীকরণের চেষ্টা করছে। তাদের মূল উদ্দেশ্য, দেশে একটি দল রাখবে। এটা তাদের বহুদিনের ইচ্ছা। ১৯৭৫ সালে তারা বাকশাল করেছিল। এখন তারা আওয়ামী লীগকে আজীবন ক্ষমতায় রাখতে চায়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সবার আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। উনি মুক্ত না হলে গণতন্ত্রের আন্দোলন সফল করা যাবে না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারের পদত্যাগ ও অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। তার আগে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন চাই।’

মির্জা ফখরুলের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে দলে যোগ দেন আবদুল করিম। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশকে ভালোবাসি। মানুষ ভালো থাকবে, স্বাধীনভাবে বসবাস করবে—এটাই আমরা চাই। বিগত দিনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যা ছিল, যে গণতন্ত্র ছিল, তা পুনরুদ্ধারের জন্যই বিএনপিতে যোগ দিচ্ছি।’

আজকের এই যোগদান অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবল আলম, মহানগর বিএনপির সদস্য সিরাজুল হক মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আবদুল করিম গাজীপুরের গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। গত নির্বাচনে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী হান্নান মিয়া ওরফে হান্নু বিজয়ী হন।

আবদুল করিম কোনো দিন আওয়ামী লীগে ছিলেন না: আ.লীগ

এই যোগদান নিয়ে কথা হয় গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খানের সঙ্গে। গাজীপুর পৌরসভার একাধিকবারের এই চেয়ারম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ১৭ বছর ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। আবদুল করিম আওয়ামী লীগে যোগ দিলে তো অন্তত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার কাছে আবেদন করতে হবে। কোনো দিন তিনি আওয়ামী লীগে ছিলেন না। মাঠপর্যায়ের কর্মীও ছিলেন না। তিনি বিএনপি ও জাতীয় পার্টির রাজনীতি করেছেন।

আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘গত সিটি নির্বাচনে একটি তালিকায় ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ছিল। এ নাম কীভাবে এল, তা নিয়ে তাৎক্ষণিক আমি প্রতিবাদ করি। এরপরই সেটা প্রত্যাহার করা হয়। সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তিনি ছিলেন না।’