মির্জা ফখরুলের মিথ্যাচার গোয়েবলসকেও ছাড়িয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের সমালোচনা করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, তাঁর মিথ্যাচার গোয়েবলসকে ছাড়িয়ে গেছে। ‘পাটশিল্প ধ্বংসের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী’ মির্জা ফখরুলের এমন মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আদমজী জুট মিলস বন্ধ করেছিল বিএনপিই। দেশের পাটকলগুলোও ১৯৯১ ও ২০০১ সালে দুই মেয়াদে খালেদা জিয়া ও বিএনপি বন্ধ করে দেয়। আর আওয়ামী লীগ সরকার পাটকলগুলো শুধু পুনরায় চালুই করেনি, শ্রমিকদের এগুলোর মালিকানারও অংশীদারত্ব দেয়। তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের মিথ্যাচারে কবরেও গোয়েবলস লজ্জা পাবে বলে মনে হয়।’

চামড়াশিল্প নিয়েও বিএনপির রাজনীতি করার অপচেষ্টা সফল হয়নি মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে চামড়া রপ্তানি ৪০০ মিলিয়ন ডলার থেকে সব মিলিয়ে ২ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে। দেশে গত দশ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির কারণে পশু কোরবানি দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের ৩০ থেকে ৪০ লাখ পশুর জায়গায় এখন প্রায় ১ কোটি পশু কোরবানি হয়। সে তুলনায় ট্যানারির সংখ্যা বাড়েনি। যদিও অনেক চামড়াশিল্প প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বেড়েছে, কিন্তু পরিবেশবান্ধবতা নিশ্চিত করার বাধ্যবাধকতায় বেশ কিছু ট্যানারি বন্ধও হয়ে গেছে। এবারের ঈদে এ অবস্থারই সুযোগ নিতে চেয়েছিল কিছু মুনফালোভী। সে কারণেই চামড়ার দরপতন হয়। আর বিএনপি চেয়েছিল এটা নিয়ে অপরাজনীতি করতে। কিন্তু তারা সফল হয়নি, সরকার সিন্ডিকেটের বিষয়টি পূর্ণ তদন্ত করছে।’

আলোচনায় জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার বিএনপি বেগম জিয়ার জন্মদিনের কেক ১৫ আগস্ট কাটেনি, জন্মদিন একই রেখে কেক কেটেছে পরদিন । জাতীয় শোক দিবসে জন্মদিনের নামে কেককাটা উৎসবের কারণে তারা জনগণের যে ব্যাপক ঘৃণার সম্মুখীন হয়েছে, সেটিই এই পরিবর্তনের কারণ। আমি তাদের অনুরোধ করব, আপনারা বিএনপি নেত্রীর জন্মদিনটি ঠিক করুন।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাঙালিরা কখনো স্বাধীন ছিলাম না। প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই বাঙালি প্রথম একটি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়ে বাঙালি নিজে নিজেদের শাসন করার অধিকার অর্জন করে। তার আগ পর্যন্ত বাঙালি সব সময় পরের দ্বারা শাসিত হয়েছে। সিরাজউদদৌলার জন্য আমরা সব সময় গর্ব করি। তিনি বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব বটে। কিন্তু তাঁর অন্দরমহলের ভাষা বাংলা ছিল না। তিনি বাঙালি ছিলেন না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই প্রকৃতপক্ষে বাঙালি স্বাধীনতা অর্জন করে। এ ঐতিহাসিক সত্যকে বুকে ধারণ করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার সম্পূর্ণ হয়নি কারণ, পলাতক খুনি, বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যের কুশীলব ও সর্বোপরি সেই হত্যার পটভূমি যারা তৈরি করেছে তাদের বিচার এখনো হয়নি। এ জন্য একটি কমিশন গঠন করে বিচার শেষ করা উচিত, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার উদাহরণ হয়ে থাকবে।’

মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাংবাদিক ফোরামের আহ্বায়ক ও ডিবিসি টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কনক কান্তি বড়ুয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগের সভাপতি এম এ জলিল, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, কুদ্দুস আফ্রাদ, আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, রফিকুল ইসলাম রতন, ওমর ফারুক, মোজাম্মেল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।