চামড়ার দরপতনে বিচারিক তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট

কোরবানিতে পশুর চামড়ার দরপতন রোধে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে বিচারিক তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন হয়েছে। আজ রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহিউদ্দিন মো. হানিফ এ রিট আবেদন করেন।

১৫ আগস্ট ‘সরকারের নজরদারি নেই, ব্যবসায়ীদের কারসাজি’ শিরোনামে প্রথম আলোয় নিউজ প্রকাশিত হয়। এটিসহ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরই আজ রোববার রিট আবেদন করেন মহিউদ্দিন মো. হানিফ।

রিটটি আজই হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চে উপস্থাপন করা হলে আদালত তা শুনানির জন্য গ্রহণ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন বলে জানান মহিউদ্দিন মো. হানিফ। তিনি বলেন, এখন হাইকোর্টের অপর কোনো বেঞ্চে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হবে।

রিট আবেদনকারী আইনজীবীর ভাষ্য, সিন্ডিকেট ও একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে চামড়ার অস্বাভাবিক দরপতন হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। চামড়াজাত পণ্য দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত, যার প্রধান কাঁচামাল হচ্ছে এই কাঁচা চামড়া। এ অবস্থায় এই শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি–প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে এই রিটে।

কোরবানির চামড়ার দাম নিয়ে গত বছরও অস্থিরতা ছিল। সেই অস্থিরতার কারণ খুঁজে দেখেনি সরকার, বিপর্যয় ঠেকাতে নেয়নি কোনো উদ্যোগ কিংবা পরিকল্পনা। ফলে, এক বছরের ব্যবধানে চামড়ার বাজারে আবারও ধস নামল। কৌশল আর কারসাজি করে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম ফেলে দিয়েছেন আড়তদার ও ট্যানারির মালিকেরা। ফলে, অনেকটা পানির দরে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন সাধারণ মানুষ ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। দাম না পেয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চামড়া সড়কে ফেলে দেওয়া ও মাটিতে পুঁতে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

চামড়ার বাজার নিয়ে অস্থিরতা ঠেকাতে সরকারেরও কোনো নজরদারি বা তৎপরতা ছিল না। ঈদের আগে চামড়ার দর বেঁধে দিয়েই দায়িত্ব সেরেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আবার দাম অস্বাভাবিকভাবে পড়ে যাওয়ায় ঈদের পরদিন গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তড়িঘড়ি করে কাঁচা চামড়া বা ওয়েট ব্লু  রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়েও দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এটি কার্যকর হলে চামড়া পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানিকারকেরা সমস্যায় পড়বেন।

অস্বাভাবিক কম দাম, সড়কে ফেলা ও মাটিতে পোঁতার কারণে কোরবানির পশুর চামড়ার বড় অংশ এবার নষ্ট হবে। ট্যানারির মালিকেরা বলছেন, চলতি বছর ৫৫ থেকে ৬০ লাখ গরু এবং ৩৫ থেকে ৪০ লাখ মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ শতাংশ গরুর চামড়া নষ্ট হবে। ছাগলের চামড়া নষ্ট হবে ৮০ শতাংশের বেশি।