এক দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৫০

এক দিনের ব্যবধানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ১৭ শতাংশ। ঢাকা শহর ও শহরের বাইরে রোগী বাড়ার ক্ষেত্রে একই প্রবণতা দেখা গেছে। তবে ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগী বেশি। এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। 

সরকারের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী ভর্তির সংখ্যা ১ হাজার ৭০৬। এর মধ্যে ঢাকা শহরে আক্রান্ত ৭৩৪ ও ঢাকা শহরের বাইরে ৯৭২ জন। এক দিনের ব্যবধানে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় আড়াই শ। 

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিরা হলেন জামালপুরের বৃষ্টি বেগম (২০) ও হামিদুল ইসলাম (৩৫)। এই নিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫২ জন মারা যাওয়ার খবর প্রথম আলো জেনেছে। সরকারি হিসাবে অবশ্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ৪০।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জামালপুরের পোশাকশ্রমিক বৃষ্টি বেগম গতকাল রোববার নিজ বাড়িতে মারা যান। তাঁর বাড়ি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার আকন্দপাড়া গ্রামে।

বৃষ্টির মা ছমিনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি ঢাকায় জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে তাঁকে ১০ আগস্ট গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে ১১ আগস্ট দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। আগের তুলনায় শারীরিকভাবে ভালো বোধ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে বৃষ্টিকে গত শনিবার রাতে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আর গতকাল রোববার সকালে তিনি মারা যান। 

জামালপুরের সিভিল সার্জন গৌতম রায় প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি বেগম ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

একই দিন দুপুরে জামালপুর সদর উপজেলার চন্দ্রা উত্তরপাড়া গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে হামিদুল ইসলাম (৩৫) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রি। হামিদুল ইসলামের ভাই সাইফুল ইসলাম জানান, তিন দিন ধরে হামিদুল ইসলাম জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বর না কমায় গত শনিবার জামালপুর শহরের স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করানো হয়। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে ওই দিনই জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসার জন্য যান। জরুরি বিভাগ থেকে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রোববার বেলা একটার দিকে তিনি মারা যান। 

এ বিষয়ে জামালপুরের সিভিল সার্জন গৌতম রায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামিদুল ইসলামের বিষয়টি আমরা শুনেছি। তবে এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তাঁর বাড়িতে স্বাস্থ্য বিভাগের লোক পাঠিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।’ তবে হামিদুল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ব্যবস্থাপত্র প্রথম আলোর কাছে আছে।