সেতুর ওপর সুপারিগাছের 'সাঁকো'

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের সমাদ্দারকাঠি গ্রামে সেতুটি অবস্থিত। ছবি: প্রথম আলো
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের সমাদ্দারকাঠি গ্রামে সেতুটি অবস্থিত। ছবি: প্রথম আলো

খাল বা নদীর ওপরে সাঁকো অনেকেই দেখেছে। কিন্তু সেতুর ওপর সাঁকো? এমনটা দেখা যায় না বললেই চলে। তবে এ রকম দৃশ্য দেখা গেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের সমাদ্দারকাঠি গ্রামে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাদ্দারকাঠি গ্রামের খেয়াকাটা খালের ওপর থাকা সেতুর স্লিপারগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই। অনেক আগেই ভেঙে খালে পড়ে গেছে। লোহার অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে অনেকাংশে ভেঙে গেছে। সেতুর মাঝ বরাবর সুপারিগাছ ফেলে ‘সাঁকো’ তৈরি করে কোনো রকম চলাচল করছে এলাকাবাসী।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংস্কারের অভাবে খেয়াকাটা খালের ওপর নির্মিত লোহার সেতুর স্লিপারগুলো বেশ কয়েক বছর আগে ভেঙে পড়ে গেছে। এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে ভাঙা সেতুটির ওপর সুপারিগাছ ফেলে ‘সাঁকো’ বানিয়ে কোনো রকম চলাচল করছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সংশ্লিষ্ট এলাকার শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ।

খেয়াকাটা খালের পূর্ব পাড়ে সমাদ্দারকাঠি শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও দুর্গামন্দির। পশ্চিম পাড়ে রয়েছে কাঁঠালতলি বাজার, কাঁঠালতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঁঠালতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও আখতার হোসেন চৌধুরী মেমোরিয়াল কলেজ।

ভাঙা সেতুর ওপর সুপারিগাছ ফেলে ‘সাঁকো’ বানিয়ে কোনো রকম চলাচল করছে লোকজন। ছবি: প্রথম আলো
ভাঙা সেতুর ওপর সুপারিগাছ ফেলে ‘সাঁকো’ বানিয়ে কোনো রকম চলাচল করছে লোকজন। ছবি: প্রথম আলো

সমাদ্দারকাঠি গ্রামের বাসিন্দা উত্তম কুমার বলেন, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ওই ভাঙা লোহার সেতু দিয়ে এলাকার মানুষ যাতায়াত করছে। তবে কোনো জনপ্রতিনিধির নজরে আসেনি সেতুটি। সমাদ্দারকাঠি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। তাই এখানকার শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি পার হয়ে কাঁঠালতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে হয়।

কাঁঠালতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলে, এই সাঁকো দিয়ে বিদ্যালয়ে যেতে তার খুবই ভয় করে।

একই এলাকার বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজটি ভাঙা থাকায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ ঘুরে আমাদের মূল সড়কে উঠতে হয়। বিশেষ করে নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না।’

মাধবখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, খেয়াকাটা খালের ওপর একটি নতুন সেতু নির্মাণ করা একান্ত প্রয়োজন।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সুলতান হোসেন বলেন, খেয়াকাটা খালের ব্রিজটি বেশ পুরোনো। গ্রামবাসীর চাহিদার কথা বিবেচনা করে ওখানে একটি নতুন ব্রিজের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।