রুয়েট শিক্ষকের হামলাকারী শনাক্ত, গ্রেপ্তার ৩

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) রাশিদুল ইসলামকে মারধরের ঘটনায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁরা সবাই খেলোয়াড় বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাঁদের দলে তিনজন মেয়েও ছিলেন। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) গতকাল সোমবার রাতে নগরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরের শিক্ষকও তাঁদের শনাক্ত করেছেন।

গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার মোল্লাপাড়া এলাকার বকুল আহমেদ (১৯), রাজপাড়া থানার আলীর মোড় এলাকার শাহানুর হোসেন ওরফে খোকন (১৯) এবং বোয়ালিয়া থানার কাদিরগঞ্জ এলাকার রিপন মণ্ডল (১৮)।

নগর ডিবি পুলিশের উপকমিশনার আবু আহাম্মদ আল মামুন জানান, ঘটনার পর থেকেই তাঁরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন। তাই আসামিদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়। এরপরই তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর মামলার বাদীও তাঁদের শনাক্ত করে গেছেন।

নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, ডিবি পুলিশ তিন আসামিকে তাঁদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে প্রথমে তাঁদের শনাক্ত করা হয়। তাঁরা সবাই খেলোয়াড়। তাঁদের গায়ের জার্সিতে ‘বিজেএমসি’ লেখা ছিল। ওসি বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাঁরা ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তাঁরা দাবি করেছেন, অনুশীলন শেষে তাঁরা বাজার করতে ঢুকেছিলেন। ঘটনাচক্রে এই শিক্ষক দম্পতির সঙ্গে তাঁদের কয়েকবার দেখা হয়েছে। একপর্যায়ে শিক্ষকের স্ত্রী তাঁদের বলেন, আপনারা পেছন পেছন ঘুরঘুর করছেন কেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি শুরু হয়। তাঁদের দাবি, এ নিয়ে শিক্ষক আগে তাঁদের কলার ধরেছেন। রাতে গ্রেপ্তারের পর শিক্ষকের সঙ্গে তাঁদের মুখোমুখি করা হয়।

১০ আগস্ট ঈদের কেনাকাটা করে বাসায় ফিরছিলেন রুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম। তাঁর অভিযোগ নগরের সাহেববাজার মণিচত্বর এলাকায় একদল বখাটে তখন তাঁর স্ত্রীকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বখাটেদের সঙ্গে তাঁর কথা-কাটাকাটি হয়।

এরপর রাশিদুল ইসলাম তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে অটোরিকশায় চড়ে বসেন। তারপরও বখাটেরা পাশের আরেকটি অটোরিকশায় উঠে সমানে কটূক্তি করতে থাকে। শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম এর প্রতিবাদ করলে বখাটেরা অটোরিকশা থেকে নেমে এসে শিক্ষককে মারধর শুরু করে। ওই শিক্ষক তখন স্ত্রীর পাশে অটোরিকশায় বসে ছিলেন। মারধরের সময় সহায়তা চাইলেও আশপাশে থাকা কেউ তাকে বাঁচাতে আসেননি।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন শিক্ষক। এটি ভাইরাল হয়ে যায়। আর ঘটনার ছয় দিন পর ১৬ আগস্ট ওই শিক্ষকের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আট তরুণ-তরুণীকে আসামি করে বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন। মামলার অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।