ডিসিকে মেহমান হিসেবে পেয়ে কেঁদে ফেললেন ভানু বেওয়া

রাজশাহীর বাগমারার পূর্বপাড়া গ্রামের বৃদ্ধা ভানু বেওয়ার বাড়িতে জেলা প্রশাসক। গতকাল সকালে। প্রথম আলো
রাজশাহীর বাগমারার পূর্বপাড়া গ্রামের বৃদ্ধা ভানু বেওয়ার বাড়িতে জেলা প্রশাসক। গতকাল সকালে। প্রথম আলো

বিধবা ভানু বেওয়া (৭৩) মেয়েকে নিয়ে কোনো রকমে বাস করতেন একটি কুঁড়েঘরে। অন্যের কাছে হাত পেতে যা রোজগার হয়, তাই দিয়ে কোনো রকমে চলেন। এই ভানু বেওয়া পাকা বাড়ি পেয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার তাঁর সেই বাড়িতে মেহমান হয়ে এসেছিলেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক। ক্ষণিকের জন্য তাঁকে পেয়ে কেঁদে ফেলেন ভানু বেওয়া।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বাগমারা পূর্ব পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ভানু বেওয়া কয়েক যুগ আগে বিধবা হন। এরপর মেয়েকে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া একখণ্ড জমিতে খড়ের তৈরি ঘরে কোনোরকম বসবাস করে আসছিলেন তিনি। এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে তাঁদের জীবন চলে। সম্প্রতি ভানু বেওয়া ও তাঁর মেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে কয়েক দফা সহযোগিতার জন্য যান। একপর্যায়ে গৃহনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ভানু বেওয়াকে একটি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। ঈদের আগের দিন ১১ আগস্ট থেকে ভানু বেওয়া প্রায় দুই লাখ টাকায় নির্মিত নতুন বাড়িতে বসবাস শুরু করেন।

গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক ও বাগমারার ইউএনও জাকিউল ইসলাম ভানু বেওয়ার বাড়িতে যান। তাঁদের সঙ্গে পুলিশসহ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাও ছিলেন। এই প্রতিনিধিও কৌতূহলবশত সেখানে যান। বাড়িতে পুলিশসহ প্রশাসনের লোকজন দেখে চমকে ওঠেন ভানু বেওয়া। জেলা প্রশাসক নিজের পরিচয় দেওয়ার পর ভয় কেটে যায় তাঁর। আবেগে আপ্লুত হয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কাছে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেন তিনি। জেলা প্রশাসকও বৃদ্ধাকে জড়িয়ে ধরেন।

জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক বলেন, ‘এ রকম অসহায় মানুষজনের পাশে যেতে পেরে ভালো লাগছে। বৃদ্ধা ভানুর মতো অন্যরাও পাকা ঘর পাবেন।’ ভানু বেওয়াকে অন্যান্য সহায়তা দেওয়ার জন্যও উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।