শ্যামাসুন্দরী খাল এখন মশার প্রজননস্থল

রংপুর নগরের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা শ্যামাসুন্দরী খালটি আবর্জনায় ভরে গেছে। গত সোমবার মুন্সীপাড়া এলাকায়।  প্রথম আলো
রংপুর নগরের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা শ্যামাসুন্দরী খালটি আবর্জনায় ভরে গেছে। গত সোমবার মুন্সীপাড়া এলাকায়। প্রথম আলো

রংপুর নগরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ঐতিহ্যবাহী শ্যামাসুন্দরী খালটি মরতে বসেছে। এটি সংস্কারে কয়েকবারে কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও এখন পানির প্রবাহ নেই। খালটি প্রায় ভরাট হয়ে ময়লা-আবর্জনা, ঝোপ-জঙ্গলে ভরপুর হয়ে মশার প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে।

শ্যামাসুন্দরী খালের দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। এটি নগরের উত্তর-পূর্ব দিকে সিও বাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মাহিগঞ্জ পর্যন্ত প্রবাহিত হয়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, খালটি খনন, সংস্কার, পাড় নির্মাণ ও এটির ওপর তিনটি সেতু নির্মাণ বাবদ ২০১২ সালে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়। এরও আগে ২০০৮-০৯ সালে খালটি সংস্কারে আরও ১২ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু মানুষের বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলতে ফেলতে খালটি আর খাল নেই। ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গেছে। আর এখান থেকে জন্ম হচ্ছে মশার।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) জেলা সাধারণ সম্পাদক আফতাব হোসেন বলেন, এই খাল সংস্কার করা নিয়ে ইতিপূর্বে অনেক মানববন্ধন-সমাবেশ হয়েছে। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খালের পেছনে অনেক টাকাও ব্যয় হয়েছে। কিন্তু খালটি ভরাট হয়ে একেবারে মরতে বসেছে। এটি রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের সদর হাসপাতালের পেছনে ইঞ্জিনিয়ারপাড়া সেতুর কাছ থেকে কামারপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশ বেশি বেহাল। এ অংশে কাদা আর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। সেই সঙ্গে ঝোপ-জঙ্গলে ভরপুর। ময়লা পানিতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

কেরানীপাড়া এলাকায় খালজুড়ে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। কিছু কিছু জায়গায় কাদাপানি। পানিতে মশা গিজগিজ করছে। ডিসির মোড়ের পাশে খাল সংস্কার হলেও তা ভেস্তে গিয়ে খালের পানি জমাট বেঁধে আছে।

কেরানীপাড়া এলাকার শরিফুল হোসেন বলেন, সিটি করপোরেশন খাল সংস্কার করলেও পর্যায়ক্রমে সেই খালেই লোকজন ময়লা ফেলছে। প্রতিবছর এই খাল পরিষ্কার করা দরকার।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, এই খাল সংস্কার করে ঐতিহ্য ফিরে আনতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এই প্রকল্প অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় কিছুটা সময় লাগবে। ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। তিনি নগরবাসীর সহযোগিতা চেয়ে খালের মধ্যে বাসাবাড়ির ময়লা–আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানিয়েছেন।