ছেলের আত্মত্যাগে মা-বাবার গর্ব

মাহাবুবুরের ছবি হাতে মা–বাবা। গতকাল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বাড়িতে। প্রথম আলো
মাহাবুবুরের ছবি হাতে মা–বাবা। গতকাল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বাড়িতে। প্রথম আলো

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর এক বন্ধুর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার গাড়িচালকের চাকরি পান মাহাবুবুর রশিদ। কিছুদিন পর ব্যক্তিগত দেহরক্ষীর দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার পর যখন গুলিবর্ষণ করা হচ্ছিল, তখন শেখ হাসিনাকে আড়াল করে রেখেছিলেন তিনি। পিঠে গুলি লাগার পরও শেখ হাসিনাকে গাড়িতে তুলে দিয়েছিল তিনি।

ছেলের এমন আত্মত্যাগে গর্ববোধ করেন বাবা হারুন অর-রশিদ ও মা হাসিনা বেগম। তাঁদের এখন একটাই চাওয়া, ছেলের খুনিসহ সেদিনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ঘাতকদের বিচার। মরার আগে আসামিদের ফাঁসি দেখে যেতে চান তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার জয়ন্তীহাজরা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়ায় মাহাবুবুরের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তাঁর মা–বাবার সঙ্গে। মা হাসিনা বেগম অসুস্থ। মাহাবুবুরের কথা বলতেই ঘরের ভেতর থেকে ফ্রেমে বাঁধা একটি ছবি নিয়ে আসেন। পাশে বসে থাকা হারুন অর-রশিদও ওই ছবির দিকে তাকিয়ে চোখ মুছেন। মাহাবুবুরের এই ছবিটি দিনে কতবার যে মা হাসিনা বেগম দেখেন, ছবিতে হাত বুলান তার হিসাব নেই।

 হারুন অর-রশিদ বললেন, সংসারের সবকিছুতেই ছেলের স্পর্শ খুঁজে ফেরেন মাহাবুবুরের মা। ছেলের স্মরণে বাড়িতে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছেন তিনি।

মাহাবুবুরের স্ত্রী শামীমা আক্তার দুই ছেলেকে নিয়ে ঢাকায় থাকেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁদের থাকার জন্য ঢাকার মিরপুরে ফ্ল্যাট দিয়েছেন। মাহাবুবুরের মেধাবী বড় ছেলে প্রকৌশল ও ছোট ছেলে চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা করছেন।